ওদের কারও অভিভাবক নেই। ওরা কথা বলতে এবং কানে শুনতে পায় না। সারা বছর চার দেওয়ালের মধ্যে কার্যত বন্দি হয়ে থাকতে হয় ওদের। এই রকম ৭৭ জন মূক এবং বধির আবাসিক কিশোর-কিশোরীকে দুর্গাপুজোর আনন্দে সামিল করলেন রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার সূর্যোদয় মূক ও বধিরক আবাসিক হোম এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের দেওয়া একটি বাসে করে ওই কিশোর-কিশোরীদের বিভিন্ন বিগ বাজেটের পুজো দেখানো হয়।
সুদর্শনপুর থেকে শাস্ত্রী সঙ্ঘ, অমর সুব্রত, বিধাননগর, দেহশ্রী, বিদ্রোহী হয়ে রবীন্দ্র ইনস্টিটিউশন- যে মণ্ডপেই মূক এবং বধিরেরা গিয়েছে, সেখানেই উদ্যোক্তাদের তরফে তাদের চকলেট, আইসক্রিম-সহ নানা উপহার দেওয়া হয়েছে। পুজো দেখার পাশে রায়গঞ্জের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত হোমের আবাসিকদের হাতে স্কুল ব্যাগ, খেলার জিনিসপত্র এবং মিষ্টি তুলে দেন। পুজো দেখানোর আগে অবশ্য আবাসিকদের নতুন জামাকাপড়, জুতো দেন হোম কর্তৃপক্ষ। সেজেগুজে তারা দল বেঁধে পুজো দেখেন। সেই সঙ্গে হোমে পুজোর তিনদিন বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। লুচি, মিষ্টি, ভাত, ফ্রাইড রাইস, মাছ, মাংস, সবজি, পায়েসের মত পদ রাখা হয়েছে মেনুতে। ৭৭ জন আবাসিকের মধ্যে ৩৩ জন কিশোরী। বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়া ওই মূক-বধির ছেলেমেয়েরা আদালতের নির্দেশে হোমে থাকেন।
হোমের অধ্যক্ষ পাথর্সারথী দাস বলেন, “সারা বছর হোমের দেওয়ালের বিতরেই ওরা থাকে। পুজোর সকালের সঙ্গে একটু ওদের আনন্দ দিতেই আমরা এই ব্যবস্থা করেছি। এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সাহায্য করেছে। হোমের নিজস্ব তহবিল থেকে নতুন পোশক, জিনিসপত্র এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ওই কিশোর-কিশোরীদের কথা বলার ক্ষমতা না থাকলেও চার দেওয়াল থেকে সাময়িক মুক্তি পেয়ে তারা যে খুশি হয়েছে, পুজো উপভোগ করেছে তা তাদের অভিব্যক্তি, ইশারায় তারা জানিয়ে দেয়। |