প্রবীণদের নিয়ে পুজো দেখলেন ডেপুটি মেয়র
নেতাজিপল্লির বাসিন্দা অশিতীপর মতিলাল অধিকারী নতুন ধুতিটি হাতে পাওয়া মাত্রই ওয়ার্ড অফিসের এক দিকে দাঁড়িয়ে তা পরলেন। গায়ে বাড়ি থেকে পড়ে আসা পাঞ্জাবি। গলায় ওয়ার্ড অফিস থেকে দেওয়া পরিচয়পত্র। ধুতি-পাঞ্জাবি পড়ে তৈরি গোপাল মণ্ডল, বলরাম সাহারাও। ৯০ বছরের বেশি বয়স রেখা বারুই, ৮৫ বছরের যোগকাশির মতো বৃদ্ধারাও সকাল থেকেই খুশি।
স্নান সেরে তৈরি হয়ে নিয়েছে। ওয়ার্ড অফিসে পৌঁছতেই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হল নতুন শাড়ি। বৃদ্ধাদের অনেকেই নতুন শাড়ি পড়ে নিলেন ওয়ার্ড অফিসের ঘরে। রুম্পা সাহা, বান্টি রায়দের মতো তরুণীরা তাঁদের শাড়ি পড়তে সাহায্য করছেন। অন্য দিন ওয়ার্ড অফিসে বসে কর্মকর্তারা সাফাই কর্মীদের কাজে পাঠান, ওয়ার্ডের খোঁজ খবর নেন। সোমবার মহাসপ্তমীতে সেই অফিস যেন বৃদ্ধবৃদ্ধাদের সাজঘর। পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা জেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মার উদ্যোগে এ দিন এলাকার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের নতুন পোশাক দেওয়া হল। বাসে করে শহরের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ ঘোরান হয়। পুজো দেখে এসে দুপুরে ওয়ার্ড অফিসে মধ্যাহ্নভোজ সেরে বাড়ি ফেরেন তাঁরা।
এমন উদ্যোগে সামিল হতে হাজির ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। রঞ্জনবাবুর ওয়ার্ড অফিসে পৌঁছে এমন চেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। বাসে করে বৃদ্ধবৃদ্ধাদের পুজো দেখাতে নিয়ে যাওয়ার যাত্রা সূচনা করেন পতাকা নেড়ে। গৌতমবাবু বলেন, “বয়স্ক বাসিন্দাদের পুজো মণ্ডপে ঘোরাতে নিয়ে যাওয়ার এই পরিকল্পনা সত্যিই ভাল। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে পুজো দেখতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁরা যাচ্ছেন অধিকাংশই গরিব মানুষ। দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন। এর একটা মানবিক দিক রয়েছে। এই ধরনের প্রচেষ্টাকে সব সময়ই আমরা সাহায্য করব। এখন অনেক জায়গাতেই এটা হচ্ছে। যত বেশি করে হবে ততই মঙ্গল।”
ডেপুটি মেয়র জানান, গরিব পরিবারের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের পুজোর ক’টা দিন যাতে আনন্দে কাটে তার জন্যই এই উদ্যোগ। তাঁর কথায়, “সকলের সহযোগিতাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। গরিব পরিবারের ওই বয়স্ক বাসিন্দাদের পোশাক দেওয়া, মণ্ডপে ঘোরাতে নিয়ে যাওয়ার, পুজোর দিনে একটু ভাল কিছু খাওয়ানোর ব্যবস্থা করার কথা জানাতেই অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সে জন্য আয়োজনে সমস্যা হয়নি।” অনেকে সাহায্য করার পাশাপাশি রঞ্জনবাবু নিজেও ব্যক্তগত ভাবে অর্থ দিয়েছেন। ওয়ার্ড অফিস সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় শ’তিনেক বৃদ্ধাবৃদ্ধাকে এ দিন বাসে করে শহরের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে ঘোরান হয়। ৮ টি স্কুল বাসে করে তাঁদের ঘোরানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। রঞ্জনবাবুর উদ্যোগ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বাস মালিকেরা। তারা বাস ভাড়া তো বটেই এমনকী জ্বালানির পয়সাও নেননি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে রাখা হয়েছিল চিকিৎসক, অ্যাম্বুল্যান্সও। গৌতমবাবু পতাকা নেড়ে যাত্রার সূচনা করতেই বৃদ্ধারা উলুধ্বনি দিয়ে ওঠেন। বাসে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় সূর্যনগর ফ্রেন্ডস ইউনিয়নের পুজোয়। সেখানে পুজোর উদ্যোক্তারা তাঁদের মিষ্টি মুখ করান। ফুলেশ্বরী হয়ে দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব, ওয়াইএমএ, উইনার্স ক্লাব, সেন্ট্রাল কলোনি, উদয়ন সমিতি, শক্তিগড়ের বিভিন্ন মণ্ডপ ঘোরান হয়। ফিরে এসে দুপুরের খাবারের মেনু ছিল মটর ডাল, মুগডাল দিয়ে ভাত, ভাজা, মটর পনিরের বিশেষ তরকারি। রেখা দেবী বলেন, “পুজোর দিনগুলিতে আমাদের মতো মানুষের পাশে থাকার জন্য রঞ্জনবাবুকে আশীবার্দ করি। আমরা মতো যাঁরা রয়েছেন সকলেই খুশি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.