|
|
|
|
ছত্তীসগঢ়ে ঢাক নিয়ে শ্রীমন্ত, মন পড়ে বাংলায় |
সুব্রত গুহ • কাঁথি |
কাঁধে ঢাক নিয়ে ভারত চষে বেড়াচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের শ্রীমন্ত ঘোড়ই। দিল্লি, মহারাস্ট্র, সুরাট, ওড়িশার পর এ বার দুর্গাপুজোয় শ্রীমন্ত ঢাক নিয়ে যাচ্ছেন ছত্তীসগঢ়ে। যদিও পুজোর সময় বাংলার বাইরে গিয়ে সুখ নেই। রুজি-রোজগারের টানে দূর-দূরান্তে যেতে হলেও মন পড়ে থাকে গ্রামবাংলাতেই।
এগরার বড়নিহারি গ্রামের বছর চল্লিশের শ্রীমন্তের হাতের কাঠি যেন ঢাকে কথা বলে। কাঠির যাদুস্পর্শে শ্রীমন্ত কখনও পুজোর আগমনী বোল বাজান আবার কখনও বিসর্জনের সুরে বিষাদের ঢেউ তোলেন শ্রোতার মনে। ঢাক বাজানো শ্রীমন্তের রক্তে। ছোট বেলায় সময়ে-অসময়ে সুযোগ পেলেই বাবার ঢাক নিয়ে বাজানোর চেষ্টা করতেন। একটু বড় হলে বাবা রামপদবাবুর কাছেই ঢাক বাজানোর তালিম নেন শ্রীমন্ত। গত বিশ্বকর্মা পুজোর সময় কাঁথিতে একটি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ঢাক বাজানোর প্রতিযোগিতায় প্রথম হন শ্রীমন্ত। তরপর থেকেই চাহিদা আরও বেড়েছে। শ্রীমন্ত বলেন, “ঢাক নিয়ে পুরো ভারত ঘুরেছি। এক বার মুম্বইতে ঢাক বাজাতে গিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। ভয়ে সেখানে যাইনি।”
দেশের বাড়িতে চার-পাঁচ কাঠা জমি আছে। তাতে সারা বছরের খোরাক জোটে না। বিভিন্ন পুজোয় ঢাক বাজিয়ে যে রোজগার হয় তাতে দু’বেলা অন্ন হয়তো জোটে, কিন্তু সাচ্ছন্দ্য ফেরে না। তাই এগরার কুঁদি বাসস্ট্যান্ডে বছরভর তবলা সারাইয়ের কাজ করেন তিন সন্তানের পিতা শ্রীমন্ত। শারদোৎসবে সবাই যখন আনন্দে মেতে উঠবে, তখন বড়নিহারির বাড়িতে তাঁর প্রতীক্ষায় স্ত্রী-সন্তানেরা। সেই কালীপুজো শেষে বাড়ি ফিরবেন শ্রীমন্ত। বিলম্বিত সময়ে খড়ের ছাউনির ঘর আর গোবর নিকানো উঠোনে নতুন করে বেজে উঠবে সুখের বোল। |
|
|
|
|
|