|
|
|
|
সন্ধে নামতেই ঢল দুই শহরের মণ্ডেপ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পুজো মানেই মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখা। বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা আর ইচ্ছে মতো খাওয়া- দাওয়া! সপ্তমীর সকাল থেকে এই ছবিই চোখে পড়েছে মেদিনীপুর- খড়্গপুর, দুই শহর ও সংলগ্ন এলাকায়। সোমবার সকাল থেকেই নতুন পোষাক পরে রাস্তায় বেরিয়েছে ছেলেমেয়েদের দল। বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড় বেড়েছে ততই।
মেদিনীপুর শহরের পুজো এখন অনেক পাল্টে গিয়েছে। প্রায় সব পুজোতেই এসেছে বৈচিত্র্য, শিল্প নৈপুণ্য। বছর পনেরো আগেও শহরের বল্লভপুর, রাজাবাজার, কোতবাজারের পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকতেন সকলে। পুজোর ক’দিন এখানেই ভিড় জমত। পরে বার্জটাউন, রাঙামাটির পুজো দর্শকদের নজর কাড়ে। কিন্তু এখন আর হাতেগোনা কয়েকটি পুজোর দিকে কেউ তাকিয়ে থাকেন না। কারণ, প্রায় সব পুজোতেই উঠে আসে নতুন কিছু। উদ্যোক্তারাও চান, তাঁদের পুজোকে আর পাঁচটা পুজোর থেকে একটু আলাদা ভাবে তুলে ধরতে। বাজেট ছোট হতে পারে। কিন্তু থাকবে শিল্পের ছোঁয়া। সামাজিক বার্তা। মেদিনীপুরের মতো রেলশহর খড়্গপুরের পুজোও এখন আগের থেকে পাল্টে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যে এখানেই সবথেকে বড় বাজেটের পুজো হয়। |
|
মেদিনীপুরের কেরানিটোলায় যানজট। সোমবার সন্ধের নিজস্ব চিত্র। |
ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই ঠাকুর দেখতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমেছে। কিন্তু সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকেই দুই শহরের রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। ভীড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। কয়েকটি রুটে বড় গাড়ি ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেদিনীপুরের অরবিন্দনগর, বার্জটাউন, রবীন্দ্রনগর থেকে বিধাননগর, কেরানীতলা- সর্বত্রই ভীড় হয়েছে চোখে পড়ার মতো। বাবা- মায়ের হাত ধরে ঠাকুর দেখেছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। অনেকে আবার গাড়ি, অটো, রিক্সায় চড়েও পুজো দেখেছেন। শহরের বার্জটাউন, রাঙামাটি, বিধাননগরে মতো কয়েকটি পুজো মন্ডপের পাশে বড় মাঠ রয়েছে। সন্ধ্যা থেকে এখানেই আড্ডা শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আড্ডা। দীর্ঘপথ হেঁটে ক্লান্ত হয়ে গেলে অনেকেই এই সব মাঠে বসে খানিক বিশ্রাম নেন। এ বারও তাই হয়েছে। সোমবার বিকেলেই দল বেঁধে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল পারমিতা ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা সাহুরা। কলেজ ছাত্রী পারমিতার কথায়, “বান্ধবীদের সঙ্গে ঠাকুর দেখার মজাই আলাদা। পুজোর ক’টা দিন আমরা ইচ্ছে মতো কাটাই। পরিবারের কেউ বকাবকিও করে না।” প্রিয়াঙ্কার কথায়, “শুধু তো ঠাকুর দেখা নয়। সেই সঙ্গে পেটপুজোও রয়েছে। এই সময় কোনও রেস্টুরেন্ট নয়, পুজো মন্ডপের পাশের মাঠে বসে খেতেই ভাল লাগে। আমরা তাই করি।” খড়্গপুর শহরের প্রেমবাজার, সাউথ ডেভেলপমেন্ট, সুভাষপল্লী সেবা সমিতি থেকে শুরু করে বোগদা বাবুলাইন, সঙ্ঘশ্রী ক্লাব- পুজো দেখতে ভীড় জমছে সর্বত্রই। শহরের কিছু জায়গায় মাঝেমধ্যে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে।
পুজোর আনন্দ আরও রঙিন করতে দুই শহরের রাস্তাতেই আলোর বন্যা। কোথাও টুনি বাল্ব, কোথাও বা এলইডি আলোর ঝলকানি চোখে পড়েছে। রঙ-বেরঙের আলো সকলেরই নজর কেড়েছে। সব মিলিয়ে যেন আলো আর পুজোর ভিড়েই রঙিন হয়েছে দুই শহর ও তার আশপাশের এলাকা। |
|
|
|
|
|