সরলেন নায়ার
প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হলেন পুলক
পালাবদল প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে। দীর্ঘ সাত বছরের ইনিংস শেষ করলেন টি কে এ নায়ার। তাঁর জায়গায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির দায়িত্বভার আজ গ্রহণ করলেন পুলক চট্টোপাধ্যায়।
বিশ্বব্যাঙ্কের পদ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ফিরবেন পুলকবাবু, এটা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল মাস আড়াই আগেই। সিদ্ধান্ত হয়েছে, নায়ার আপাতত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পদে কাজ করবেন। ওই পদটি হবে এক জন প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদার। তবে সরকারি সূত্রের খবর, খুব বেশি দিন তাঁর এই পদে থাকার সম্ভাবনা নেই। টুজি-সহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর অফিস এবং দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে নায়ারের ভূমিকা নিয়েও। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, সেই সমস্যার সমাধানের জন্যই তড়িঘড়ি বিশ্বব্যাঙ্কে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নয়াদিল্লি নিয়ে আসা হল পুলকবাবুকে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে পুলক চট্টোপাধ্যায়ই প্রথম বাঙালি আমলা। উত্তরপ্রদেশের ক্যাডারের ১৯৭৪ সালের বাঙালি আইএএস পুলকবাবু বিশ্বব্যাঙ্কের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন। সহকর্মীদের বক্তব্য, ব্যাঙ্ক ম্যানেজমেন্ট যাতে নিজেদের দায়িত্ব পালনে সতর্ক থাকে, তার জন্য প্রবল সক্রিয় থাকতেন পুলকবাবু। আর এই ‘সক্রিয়তা’র জন্যই বিশ্বব্যাঙ্কের বোর্ডরুমে তাঁকে ঠাট্টা করে ডাকা হত ‘মিস্টার হেডেক’ বলে!
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে অবশ্য এটাই প্রথম ইনিংস নয় তাঁর। এর আগে ইউপিএ সরকারের প্রথম জমানায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তাঁকে বিশ্বব্যাঙ্কে কাজের জন্য ওয়াশিংটন পাঠানো হয়। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে তাঁর ওই পদে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পুলকবাবুকে দিল্লিতে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। কংগ্রেসের একটি বড় অংশ মনে করছে, বিভিন্ন
পুলক চট্টোপাধ্যায়
মন্ত্রকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সমন্বয় এবং সার্বিক ভাবে দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজটি করার ক্ষেত্রে পুলকবাবু কার্যকরী ভূমিকা নেবেন।
১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজীব যখন অমেঠি থেকে নির্বাচিত হন, তার সাত মাস পরে সুলতানপুরে ডেপুটি কমিশনার পদে যোগ দেন পুলকবাবু। তাঁর বয়স তখন ২৯। ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বরে রায়বরেলীর জেলাশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। সেই সময় থেকেই রাজীব গাঁধীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ শুরু তাঁর। পরবর্তী কালে দশ জনপথ তথা সনিয়া গাঁধীরও বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন এই বাঙালি আমলা। অনেক পরে, এনডিএ-র সময়ে সনিয়া গাঁধী যখন প্রধান বিরোধী দলনেত্রী, তখন পুলকবাবুকেই তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। সরকার এবং কংগ্রেসের একটি বড় অংশের ধারণা, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারা এবং মন্ত্রগুপ্তির প্রশ্নে বিশ্বস্ততা বজায় রাখার জন্য সুপরিচিত বলেই পুলকবাবুকে চলতি সঙ্কটের সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ভাবা হয়েছে।
বিদায়ী প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি নারায়ের ভূমিকা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই প্রশ্ন উঠেছিল। নায়ার তাঁর নিজের রাজ্য কেরল এবং পঞ্জাব ক্যাডারের আমলাদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছিলেন বলে কংগ্রেসের একাধিক নেতা অভিযোগ তুলেছিলেন। একটি বিশেষ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে নায়ারের ঘনিষ্ঠতা নিয়েও অভিযোগ ছিল। পুলকবাবুর মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এক ব্যক্তিত্বকে এই পদে আনাটা তাই জরুরি ছিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.