আসছে নয়া পদ্ধতি
দারিদ্রসীমা তারা ঠিক করেনি, পিছু হটে সাফাই যোজনা কমিশনের
দারিদ্রসীমার প্রস্তাবিত নতুন সংজ্ঞা নিয়ে দেশ জুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পিছু হঠল যোজনা কমিশন! জানিয়ে দিল, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে নতুন পদ্ধতিতে দারিদ্রসীমা নির্ধারণ করা হবে।
সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে কমিশনই জানিয়েছিল, শহরাঞ্চলে যাঁদের দৈনিক ৩২ টাকা এবং গ্রামাঞ্চলে যাঁদের দৈনিক ২৬ টাকা খরচেরও সামর্থ্য নেই, একমাত্র তাঁরাই দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী (বিপিএল) হিসেবে গণ্য হবেন। এই সীমারেখা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র আপত্তি ওঠে। যেমন, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লিখে বলেছেন, এই অল্প টাকায় দিন গুজরান করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব এই সীমা বাড়ানো দরকার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এমনকী কংগ্রেসের মধ্য থেকেও একই দাবি উঠেছে। রাহুল গাঁধী নিজেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর পক্ষপাতী বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরাও এই সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই সমালোচনার বাতাবরণে গত কাল বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের ডেপুটি চেয়ারপার্সন মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তার পরে আজ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, শীর্ষ আদালতকে দেওয়া ওই তথ্য কমিশনের নয়। একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাবে তেণ্ডুলকর কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই তথ্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা কখনওই কার্যকর করা হয়নি। দারিদ্রসীমার এই মাপকাঠির পক্ষে যোজনা কমিশনের একাংশের যুক্তি ছিল, অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে সরকারি ভর্তুকির সুবিধা দিতে গেলে দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচিই ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মন্টেক অবশ্য আজ বলেন, “কমিশন গরিব মানুষের সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। এই সীমা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগও করা হয়নি।”
দারিদ্রসীমা নিয়ে যাবতীয় ‘গোলমালের’ দায় তেণ্ডুলকর কমিটির উপরেই চাপিয়েছেন মন্টেক। তাঁর মতে, ওই কমিটি দারিদ্রসীমা নির্ধারণের যে পদ্ধতি ঠিক করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এতে আয়ের পরিমাণ অত্যন্ত কম রাখা হয়েছে। ফলে এই সীমার সামান্য উপরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও সরকারি সাহায্য প্রয়োজন। তবে একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষদের কাছে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তেণ্ডুলকর কমিটির সুপারিশ একটা দিকনির্দেশ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন তিনি।
আজ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্টেক। উল্লেখ্য, দারিদ্রসীমা নিয়ে যাঁরা আপত্তি জানিয়েছিলেন, জয়রাম তাঁদের অন্যতম। ওই বৈঠকের পরে একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জয়রাম ও মন্টেক। জয়রামের সঙ্গে তাঁর কোনও মতপার্থক্য নেই দাবি করে মন্টেক বলেন, ‘‘বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এবং আমরা একমত হয়েছি।” জয়রামও জানান, দারিদ্রসীমা নির্ধারণ এবং গ্রামোন্নয়নের মধ্যে প্রয়োজনীয় যোগসূত্র গড়তে সার্বিক ঐকমত্য হয়েছে। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে যে সব ফাঁকফোকর রয়েছে, সেগুলি আর্থ-সামাজিক এবং জাতিগত জনগণনার সমীক্ষায় সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। ইতিমধ্যেই এই সমীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য সুরক্ষা বিলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্রসীমা নির্ধারণের নয়া পদ্ধতি স্থির করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.