বিধানসভায় হইচইয়ের জেরে স্পিকারের দিকে এ বার ফ্যান নিয়ে তেড়ে গিয়ে নতুন নজির তৈরি করলেন পিডিপি বিধায়ক মৌলবি ইফতিকার হুসেন আনসারি।
বিরোধীদের দাবি ছিল, পুলিশি হেফাজতে ন্যাশনাল কনফারেন্স কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ নিয়েই শুধু প্রশ্নোত্তর পর্ব চালাতে হবে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায়। আজ তাই বাকি সব বিষয়েই মুলতুবি প্রস্তাব আনার জন্য আবেদন করেন পিডিপি নেতারা। কিন্তু স্পিকার মহম্মদ আকবর লোন তাতে কান দেননি। তিন ঘণ্টায় তিন বার মুলতুবি হয়ে যায় সভা। তার মধ্যেই স্পিকারের সঙ্গে তুমুল বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পিডিপি বিধায়ক মৌলবি ইফতিকার হুসেন আনসারি। এখানেই শেষ নয়। স্পিকারও ধৈর্য হারিয়ে পিডিপি নেতাকে কটূক্তি করেন। লোনের সেই কথায় উত্তেজিত হয়ে বিধানসভার স্ট্যান্ড ফ্যান তুলে তেড়ে যান বিরোধী নেতা। দু’জনেই দু’জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। পরে স্পিকার অবশ্য ক্ষমা চান। হইহট্টগোলে এর পরে সারা দিনের জন্যই মুলতুবি হয়ে যায় বিধানসভা।
বিধানসভায় বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন শাসক দলের বিধায়করাও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে ন্যাশনাল কনফারেন্সের কর্মী সইদ মহম্মদ ইউসুফের (৩০) রহস্যজনক মৃত্যু হয়। বিরোধীদের সমালোচনার জেরে ইউসুফ-মৃত্যুর বিতর্কে সরব হন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও। তিনি সাফ বলেছেন, “এই নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি হতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।” যদিও তিনি মনে করেন, ওই ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। তাঁর নীরব থাকার সুযোগ নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। |
লক্ষ স্পিকার। পাখা ছুড়ছেন বিধায়ক ইফতিকার আনসারি। ছবি: পি টি আই |
ওমরের বক্তব্য, ‘‘দলের দু’জন ইউসুফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন। ৩ জনকেই ডেকে পাঠাই। রাজ্যের অপরাধদমন শাখার অফিসারদের নির্দেশ দিই বিষয়টির তদন্ত করতে। তার পরের দিনই আমাকে জানানো হয় ইউসুফ মারা গিয়েছেন।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে, মৃত্যু নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। এতে কিছু গোপন করার নেই। তবে পুলিশি হেফাজতে অত্যাচারে ইউসুফের মৃত্যু হয়নি বলে দাবি ওমরের। তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে না এলে এই নিয়ে কিছু বলা উচিত নয়। বিরোধী নেত্রী মেহবুবা মুফতি অবশ্য ওমরের ইস্তফা দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী এ বার খুনের দায়ে অভিযুক্ত। স্পিকারও শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছেন। বিরোধীদের কটূক্তি করছেন।”
স্পিকার শুধু ইউসুফ-মৃত্যুর প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব চালানোর পক্ষপাতী ছিলেন না। কারণ তাঁর মতে, ইউসুফের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তাধীন। বিধানসভায় এই নিয়ে কথা হলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে। |