যাত্রিক ক্লাবের পুজোর থিম এ বার আদিবাসী। মণ্ডপটি মাটির বাড়ির আদলে খড়ের ছাউনি দেওয়া। মণ্ডপের উপরে লেখা ‘রঘুনাথ মুর্মুর বাখল’। মূল মণ্ডপের দু’দিকের দেওয়ালে রয়েছে আদিবাসী শিল্পকলার কারুকাজ। ডান দিকে লাঙল, মই, গরুর গাড়ির চাকা ইতস্তত সাজানো। এ ছাড়াও আদিবাসীদের ব্যবহার্য যাবতীয় সামগ্রী বিভিন্ন দেওয়ালে টাঙানো রয়েছে। বাঁ দিকে আছে ঢেঁকিশাল। পুরনো ঢেঁকি সেখানে বসানো। পুজোর চারদিনই সেখানে ঢেঁকিতে ধান থেকে চাল উৎপাদনের কাজ করছেন আদিবাসী মহিলারা। মণ্ডপের প্রবেশ পথে মুখে খড়ের ছাউনি দেওয়া লম্বা প্রাচীর। প্রাচীরের দেওয়ালে কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী ম্যুরাল। প্রবেশ পথের ডানদিকে বসানো হয়েছে বাঁশের ঝাড়। মণ্ডপের সঙ্গে সাজুয্য রেখেই শিল্পী তৈরি করেছেন পটে আঁকা মাটির দেবীমূর্তি। দুর্গা অসুর বধ করার পরে ত্রিশূল ফেলে দিয়ে পদ্মফুল ধরেছেন। তবে অভিনব এই মণ্ডপ তৈরির কৃতিত্ব কিছুতেই একা নিতে রাজি নন হুমায়ুন। বলছেন, “আফজল, দীপজয়, প্রীতম, সন্তোষ আর পীযূষএই প্রশিক্ষণরত তরুণ শিল্পীদেরও অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে এই সৃষ্টির পিছনে।”
|
চৌরঙ্গি ক্লাবের পুজোর থিম মিশর। মিশরের নীল নদের তীরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ফ্যারাও দ্বিতীয় রামেসেসের আমলে গড়ে উঠেছিল পাথরের তৈরি ৭০ ফুটেরও বেশি উঁচু মন্দির আবু সিম্বেল। ওই মন্দিরের আদলেই এ বার মণ্ডপ তৈরি করেছেন রবিউল। থার্মোকল ব্যবহার করে এত নিখুঁত ভাস্কর্য তৈরি করেছেন শিল্পী এবং রঙের ব্যবহার এত সুন্দর যে মণ্ডপে ঢুকলে মনে হবে, টাইম মেশিনে যেন আপনি পৌঁছে গিয়েছেন মিশরীয় সভ্যতায়। মণ্ডপের ভাবনাটি এসেছিল ক্লাবের সদস্য দেবাশিস ধীবরের মাথা থেকে। পরে আরও দুই সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী ও সৌরেন্দ্রনাথ ভাণ্ডারি ইন্টারনেট ঘেঁটে যাবতীয় তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করেন। এর পরে তো শিল্পী রবিউলের কামাল আছেই! মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমা। সব মিলিয়ে যাত্রিক ও চৌরঙ্গি ক্লাবের পুজো যে এ বার দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। |