প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট বুরহানুদ্দিন রব্বানির হত্যার পর থেকে পাক-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে চাপানউতোর শুরু হয়েছিল তা মেটার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। তবে যে হক্কানি গোষ্ঠীকে নিয়ে এত বিতর্ক, তাদের অবস্থান কিছুটা পরিষ্কার ভাবে জানা গিয়েছে আজ। হক্কানি গোষ্ঠীর বর্তমান নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি এক সাক্ষাৎকারে তাঁদের বিরুদ্ধে রব্বানি-হত্যা, কাবুলের ভারতীয় দূতাবাসে হামলা বা পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে যোগাযোগের ‘মার্কিন তত্ত্ব’ উড়িয়ে দিয়েছেন। সিরাজুদ্দিনের দাবি, আইএসআই-এর নয়, সর্ব্বোচ্চ তালিবান নেতৃত্বের পরামর্শ অনুসারেই কাজ করেন তাঁরা। তাঁদের আনুগত্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র নয়, সর্ব্বোচ্চ তালিবান নেতা মোল্লা ওমরের প্রতি। তাঁর বক্তব্য, আফগানিস্তানের মাটি থেকে আমেরিকার শেষ সেনা সরে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের মার্কিন বিরোধিতা বহাল থাকবে। তবে সেই বিরোধিতার রূপটি ঠিক কেমন হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি ওই নেতা।
সিরাজুদ্দিন হক্কানির এই সাক্ষাৎকার নিঃসন্দেহে কিছুটা স্বস্তি জোগাবে পাক সরকারকে। সিরাজুদ্দিন ওই সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, আইএসআই-এর সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের প্রসঙ্গ বারবার তুলে ওয়াশিংটন আসলে আফগানিস্তানের মাটিতে তাদের ব্যর্থতা লুকোতে চাইছে। আগামী বছরেই ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমেরিকায়। কৌশলগত কারণে ওবামা প্রশাসন তার আগেই মার্কিন জনতার দাবি মেনে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করতে পারবে না। তাই তার একটি গ্রহণযোগ্য যুক্তি খাড়া করতেই এখন এই হক্কানি-আইএসআই যোগাযোগের কথা বলা হচ্ছে বলে দাবি ওই নেতার। একই সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতি তার সতর্কবার্তা, দ্রুত মার্কিন সঙ্গ না ছাড়লে সে দেশ ধ্বংস করে ছাড়বে আমেরিকা।
ইসালামাবাদ ও কাবুলের এই টানাপোড়েনের মধ্যেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি ফের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে আলোচনার কথা বলেছেন। গত কাল রাতে লাহৌরে নিজের বাসভবনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গিলানি জানান, গত সপ্তাহের সর্বদল বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে খুব শিগগিরই তাঁর সরকার উত্তর-পশ্চিমের স্বয়ংশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন উপজাতিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। তবে হক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গেও তাঁরা আলোচনার কথা ভাবছেন কী না, সে প্রসঙ্গে স্পষ্ট উত্তর দেননি পাক প্রধানমন্ত্রী। ২০০৯-এ সোয়াট উপত্যকায় যে ভাবে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছিল পাক সরকার, এ বারও সে ভাবেই তাঁরা শুরু করতে চান বলে জানান গিলানি। উল্লেখযোগ্য, সোয়াট উপত্যকায় ইসলামাবাদের শান্তির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। আজ কন্দহরে দু’টি আলাদা আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক।
|
কাশ্মীরে হত পুরনো লস্কর কম্যান্ডার
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীনগর |
নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে কাশ্মীরে লস্কর-ই-তইবার সব চেয়ে বেশি দিন ধরে সক্রিয় কম্যান্ডার। আজ পুলওয়ামা জেলায় পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে আব্দুল রহমান নামে ওই জঙ্গি। পুলিশ জানিয়েছে, পুলওয়ামার শুভধনি গ্রামে জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়েছিল নিরাপত্তাবাহিনী। আজ সকাল সাড়ে এগারোটার সময়ে ওই গ্রামে পৌঁছতেই পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের যৌথ দলের উপরে গুলি বর্ষণ করা হয়। শুরু হয় গুলির লড়াই। সংঘর্ষে আব্দুল রহমান নামে এক লস্কর জঙ্গি নিহত হয়েছে। |
আব্দুল রহমান |
|
পাকিস্তানের বাসিন্দা আব্দুল রহমান ২০০৫-এ জম্মু-কাশ্মীরে আসে। তখন কুপওয়ারায় সক্রিয় ছিল সে। পরে দক্ষিণ কাশ্মীরে লস্করের কাজে মুখ্য ভূমিকা পালন করত রহমান। ২০০৯-এর সেপ্টেম্বরে শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলের সামনে বিস্ফোরণে রহমান জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। সে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর উপরে আরও অনেক হামলার সঙ্গেও জড়িত ছিল বলে সন্দেহ। |