গয়না লুঠ করতেই জোড়া খুন, দাবি করল পুলিশ
গের দিন পুলিশ জানিয়েছিল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন হয়েছেন বধূ ও বৃদ্ধা। কেতুগ্রামের কান্দরায় শনিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারও করা হয় নিহত বধূ গৌরী মাঝির স্বামী সুয়াজ মাঝিকে। কিন্তু সোমবার পুলিশ জানাল, বৃদ্ধা বাড়িওয়ালির গয়না লুঠ করতে এসেই তাঁকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুরো ঘটনা জেনে যাওয়ায় খুন হন গৌরী। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সোমবার পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এক জনের কাছ থেকে বেশ কিছু গয়নাও উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটোয়ার পঞ্চবটিপাড়ার বাসিন্দা সুয়াজ মাঝির স্ত্রী গৌরী গত মাস দেড়েক বাড়ি ছেড়ে পড়শি যুবক রূপক বৈরাগ্যের সঙ্গে কেতুগ্রামের কান্দরায় থাকছিলেন। কান্দরা ডাকবাংলো মোড়ের কাছে রেখারানি রায়ের বাড়িতে ভাড়া ছিলেন তাঁরা। রূপক কান্দরার একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন। পুলিশের কাছে অভিযোগে রূপক জানিয়েছেন, কিছু দিন ধরে সুয়াজ গৌরীকে খুন করবেন বলে হুমকি দিচ্ছিলেন। শনিবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, দোতলার ঠাকুরঘরে গৌরী এবং রান্নাঘরে রেখারানিদেবীর গলার নলি কাটা দেহ পড়ে রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান ছিল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এমন ঘটনা। জোড়া খুনে জড়িত সন্দেহে সুয়াজ মাঝিকে রবিবার গ্রেফতারও করে পুলিশ।
সোমবার অবশ্য পুলিশ জানায়, তদন্তে এগিয়ে বোঝা গিয়েছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই ঘটনা ঘটেনি। রেখারানিদেবীর গায়ে থাকা গয়না লুঠ করতে গিয়েই খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলার জন্যই রেখারানিদেবীকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুরো ঘটনা জেনে ফেলার জন্য গৌরীদেবীকেও খুন করা হয়। অভিযুক্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি জানান, ধৃতেরা হল বুড়ো সাহা, কৃষ্ণ ধর, বাবু থান্ডার, বিমল সাহা ও অষ্ট ঘোষ। বুড়ো সাহাকে সোমবার রাতে অজয়ের কাশীরামদাস সেতুর কাছ থেকে ধরা হয়। তার কাছ থেকে বেশ কিছু গয়না পাওয়া গিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। অন্য চার জনকে এ দিন সকালে ধরা হয়। কৃষ্ণ এ বছরই বীরভূমের কীর্ণাহারের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, রূপক তাদের জানিয়েছিলেন, প্রতিবেশী যুবক কৃষ্ণ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে কথা বলতে রেখাদেবীর কাছে গিয়েছিল। এসডিপিও (কাটোয়া) জ্যোতির্ময় রায় বলেন, “এক দিকে রূপকের এই বক্তব্য, অন্য দিকে রেখারানিদেবীর মেয়েরা জানান, কানের দুল ছাড়া তাঁদের মায়ের গায়ের কোনও গয়না পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই আমাদের সন্দেহ হয়। রাতভর তদন্ত চলে।”
পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, গয়না লুঠের পরিকল্পনা করেছিলেন বাবু সাহা। তিনি বছরখানেক আগে রেখাদেবীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শনিবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণকে সঙ্গে নিয়ে বাবু ওই বাড়িতে যান। অন্য তিন জন পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢোকে। রেখারানিদেবীর গা থেকে গয়না খুলে নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। তখন প্রথমে তাঁর মাথায় আঘাত, পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। চেঁচামেচি শুনে গৌরী একতলা থেকে উপরে উঠে এলে তাঁকেও খুন করে দুষ্কৃতীরা। সোমবার বিকেলে ধৃতদের জেরা করে কান্দরা পূর্ত দফতরের (রাস্তা) অফিসের পাশের পুকুরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তার পরে রেখাদেবীর বাড়িতে গিয়ে ধৃতেরা কী ভাবে খুন করে, তার মহড়াও দেয়। একটি কাটারি, ছোট কোদাল ও মিথাইল অ্যালকোহল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ দিকে, রবিবার ধৃত সুয়াজ মাঝিকে এ দিন কাটোয়া আদালতে তোলা হলে তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.