|
|
|
|
ময়নাগুড়িতে আজ বাস বন্ধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় বাস ও ট্রাক থামিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা আদায়ের অভিযোগে কর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ, বুধবার ময়নাগুড়িতে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিল চারটি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের যৌথ কমিটি। ওই ধর্মঘট আন্দোলনে তৃণমূল ও কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের পাশে দাঁড়িয়েছে সিটু প্রভাবিত নর্থ বেঙ্গল বাস অ্যাণ্ড ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের ময়নাগুড়ি শাখা কমিটির সম্পাদক প্রবীরকুমার মিত্র বলেন, “পুলিশ পরিবহণ কর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে। তাই রাজনীতির কথা না-ভেবে কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছি।” আইএনটিইউসি প্রভাবিত বেসরকারি পরিবহণ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি রতন কুণ্ডু বলেন, “কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ডান ও বাম চারটি সংগঠনের তরফে যৌথভাবে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এখানে রাজনীতির কিছু নেই। বুধবার ছোটবড় সমস্ত পরিবহণ বন্ধ থাকবে।” রাস্তা আটকে চাঁদা তোলার অভিযোগে ১৭ সেপ্টেম্বর ৪ জন বেসরকারি পরিবহণ কর্মীকে গ্রেফতার করে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্বকর্মা পুজো বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহণ সংগঠন। ক্ষুব্ধ পরিবহণ কর্মীদের অভিযোগ, শ্রমিকদের পক্ষে পকেটের টাকা খরচ করে পুজোর আয়োজন করা সম্ভব নয়। বাইরে থেকে চাঁদা তুলতে হয়। পুলিশ সেটা জানে। কিন্তু তবু পুজোর আগে মিথ্যা অভিযোগে কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবারেও তাঁদের কেউ জামিনে ছাড়া পায়নি। ঘটনার প্রতিবাদে বাধ্য হয়ে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। নর্থ বেঙ্গল মোটর কর্মী সঙ্ঘের সম্পাদক দীপক সান্যাল বলেন, “পরিবহণ কর্মীদের কেউ জুলুম করে চাঁদা আদায় করেনি। প্রতি বছর বাস মালিকরা আমাদের তালিকা দিয়ে জানিয়ে দেন সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে কত চাঁদা দেওয়া হবে। সিণ্ডিকেটের বাইরে থাকা বাসের চাঁদা রাস্তায় দাঁড়িয়ে তুলতে হয়। পরিবহণ কর্মীরা এটাই করছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেখান থেকে অন্যায়ভাবে কর্মীদের গ্রেফতার করে।” যদিও পুলিশ কর্তারা বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা জানান, শহরের বিভিন্ন মহল থেকে রাস্তায় বাস ও ট্রাক থামিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদায়ের অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী দূরপাল্লার বাসের যাত্রী ও ট্রাকের কর্মীরাও ফোনে ওই অভিযোগ জানায়। এর পরেই বিভিন্ন পুজো কমিটিকে সতর্ক করে রাস্তায় নজরদারি বাড়ানো হয়। কিন্তু পরিবহণ কর্মীরা কথা রাখেননি। বিভিন্ন রাস্তায় চাঁদার জুলুম চলতে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কর্তাদের প্রশ্ন, পরিবহণ কর্মীরা কেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা তুলবেন! বাস বা ট্রাক মালিকের কাছে না-গিয়ে কেন অন্য পরিবহণ কর্মীর উপরে চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি করে যাত্রীদের সমস্যায় ফেলবেন! ময়নাগুড়ি থানার আইসি বিশ্বনাথ হালদার বলেন, “আমরা আগেই বলেছি রাস্তা আটকে চাঁদা আদায়ের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। সেটা কেউ না-শুনলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ দিকে পরিবহণ কর্মীরা বিরোধিতায় নামলেও চাঁদার জুলুম বন্ধে পুলিশের ভূমিকায় খুশি ময়নাগুড়ির বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকে মনে করছেন বিশ্বকর্মা পুজোর আগে পুলিশের কড়া মনোভাবের ফলে আগামী দিনে অন্য পুজো কমিটিগুলি সতর্ক হবে। বাসিন্দাদের একাংশ পরিবহণ ধর্মঘটেরও বিরোধী। এক শিক্ষক বলেন, “আইনি লড়াই ছেড়ে ধর্মঘট করে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলার কোনও অধিকার আছে কিনা সেটা একবার পরিবহণ কর্মী ইউনিয়নের কর্তারা ভেবে দেখা প্রয়োজন।’’ |
|
|
 |
|
|