কাবুলে তালিবান হানায় নিহত ১৩, জখম ২২
ফের তালিবান হামলার নিশানায় আমেরিকা।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন আফগানিস্তান থেকে সেনা সরাতে বদ্ধপরিকর, তখনই রাজধানী কাবুলে মার্কিন দূতাবাস ও ন্যাটোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে হামলা চালাল জঙ্গিরা। নিরাপত্তা যেখানে সব থেকে বেশি, সেই দূতাবাস-এলাকা আব্দুল হক স্কোয়্যারেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত তেরো জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন সাধারণ মানুষ, চার জন পুলিশ এবং ছ’জন জঙ্গি। জখম ২২ জন। তাঁদের মধ্যে এক সাংবাদিক রয়েছেন। তালিবান হামলার দায় স্বীকার করেছে। রাত পর্যন্ত এলাকাটি সম্পূর্ণ জঙ্গিমুক্ত হয়নি বলে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর।
হামলার পর পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। কাবুলে মঙ্গলবার। ছবি: এ পি
এ দিনই আফগানিস্তানে দু’দিনের সফরে গিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। আব্দুল হক স্কোয়্যারে যখন প্রবল গোলাগুলি চলছে, তখন মাথাই সবে বিমানবন্দরে নেমেছেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা তিনি বিমানবন্দরেই আটকে ছিলেন। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতীয় গোয়েন্দারা কয়েক সপ্তাহ ধরেই কাবুলে জঙ্গি হানার আশঙ্কা করছিলেন। কাবুলে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এই সতর্কবার্তা পাওয়ার পরে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস এবং কন্দহর, জালালাবাদ ও মজর-ই-শরিফের মতো শহরে ভারতীয় কনস্যুলেটে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। আজ জঙ্গিরা অবশ্য ভারতীয় দূতাবাসে হামলা করেনি। তবে সার্বিক ভাবে ভারত মনে করে, এই মুহূর্তে সে দেশ থেকে সব সেনা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। এ দিনের হামলা তা আবার বোঝাল। আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সেখানে সুযোগ পেলে তিনি আমেরিকাকে আর এক বার বলবেন, এলাকার এবং বিশ্বের নিরাপত্তার খাতিরে আফগানিস্তান থেকে যেন সব সেনা এখনই সরিয়ে না নেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এ ছাড়া, আজকের হামলার ধরন থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এটি তালিবান-সহযোগী জঙ্গি গোষ্ঠী ‘হক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর কাজ। পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর মূল ঘাঁটি। ২০০৮-এর ভারতীয় দূতাবাস-সহ আফগানিস্তানে একাধিক বড় হামলার পেছনে তারা রয়েছে। তাই আজ মাথাইয়ের সফর শুরুর দিনই এই হামলা নয়াদিল্লির প্রতিও সতর্কবার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, আজ দুপুর দেড়টায় হামলা চালাতে শুরু করে দেয় জঙ্গিরা। হামলার প্রধান লক্ষ্য, আব্দুল হক স্কোয়্যারের কাছেই মার্কিন দূতাবাস ও ন্যাটোর প্রধান কার্যালয়। এলাকার একটি নির্মীয়মাণ বহুতল দখল করে নেয় তারা। সেই বাড়ি থেকে ন্যাটোর দফতর ও মার্কিন দূতাবাস লক্ষ করে রকেট ছুড়তে থাকে জঙ্গিরা। একটি রকেট-চালিত গ্রেনেড মার্কিন দূতাবাসের চত্বরের মধ্যে ফাটে। তবে দূতাবাসের কোনও কর্মী জখম হননি। পশ্চিম কাবুলে পুলিশ ফাঁড়িতেও হামলা চালানো হয়।
২০০১-এর নভেম্বরে আফগানিস্তান থেকে তালিবানকে উৎখাত করে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু এক দশক পরে ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে তারা। বিশেষ করে এমন সময়, যখন আফগানিস্তানের হাতে দেশের নিরাপত্তার ভার তুলে দিয়ে সেনা সরিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ওবামা। গত কয়েক মাসে কাবুলের বিদেশি দফতরগুলিতে বার বার আঘাত করছে তালিবান। ১৮ অগস্ট কাবুলে ব্রিটিশ কাউন্সিলে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল। ন’জন নিহত হন। জুন মাসে ইন্টার-কন্টিনেন্টাল হোটেলে জঙ্গি হামলায় ১২ জন মারা যান। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে দু’টি বড় মাপের জঙ্গি হামলা হয়েছিল। তবে এর আগে এ ভাবে শহরের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে হামলা চালায়নি জঙ্গিরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক সূত্রের মতে, বড় মাপের হত্যালীলা চালানোর বদলে আফগান এবং মিত্রবাহিনীর শক্তিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে, সাধারণ মানুষকে আরও সন্ত্রস্ত করাই আজকের হামলার প্রধান উদ্দেশ্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.