আন্তর্জাতিক শিল্প-প্রদর্শনী
অদেখা চিন
লকাতার জাতীয় গ্রন্থাগার এখন চিনের দখলে। না, পুরোটা অবশ্য নয়, পুরনো বেলভেডিয়ার ভবনের একাংশ। প্রথম চিন সম্রাটের বিখ্যাত টেরাকোটা সেনাবাহিনীর দুই যোদ্ধা যেমন বাইশশো বছর আগে সম্রাটের সমাধি পাহারা দিত, এখানেও তারা নজর রাখবে শ’খানেক অমূল্য নিদর্শনের উপর (সঙ্গের ছবি)। কলকাতায় তো বটেই, ভারতেও চিনের সভ্যতা-সংস্কৃতির চার হাজার বছরের এই সব নিদর্শন কখনও প্রদর্শিত হয়নি। ২০০৬ ঘোষিত হয়েছিল ‘ভারত-চিন মৈত্রীবর্ষ’ হিসাবে, ২০০৬-০৭ জুড়ে চিনের চারটি শহরে প্রাচীন ভারতীয় শিল্পের প্রদর্শনীও হয়। সেই সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সূত্র ধরেই এ বার ভারতে এল এই শিল্পকৃতি। ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে শুরু হয়ে মুম্বই হায়দরাবাদ ঘুরে শেষে কলকাতায়। আয়োজনে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ও চিনের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কালচারাল হেরিটেজ।
ছবি তুলেছেন শুভাশিস ভট্টাচার্য।
কলকাতায় এত বড় মাপের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শেষ কবে হয়েছে? বোধহয় সেই আশির দশকে রদ্যাঁর পর আর হয়নি। বেলভেডিয়ার ভবনকে অন্য ধরনের সংগ্রহশালায় রূপান্তরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকারের উদ্যোগে গুরুত্ব পেয়েছিল ওই ভবনে এমন বড় মাপের প্রদর্শনীর উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখা। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা চক্রও তপনজ্যোতি বৈদ্যের নেতৃত্বে ভবন সংস্কারে হাত দিয়ে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে সেই প্রদর্শনী কক্ষকে অতীতের গৌরবে ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রদর্শনীতে দেখা যাবে নব্যপ্রস্তর যুগের চাষবাসের যন্ত্রপাতি, ব্রোঞ্জযুগের পাত্র, তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতকের ধাতু ও পাথরের নানা বৌদ্ধমূর্তি, দশম থেকে ত্রয়োদশ শতকের বিখ্যাত পোর্সেলিন, এবং পরবর্তী মিং ও কিং রাজবংশের সমকালীন পোর্সেলিনও। ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় ‘ট্রেজার্স অব এনশিয়েন্ট চায়না’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সভাপতিত্ব করবেন জহর সরকার, থাকবেন পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের মহানির্দেশক গৌতম সেনগুপ্ত ও জাতীয় গ্রন্থাগারের মহানির্দেশক স্বপন চক্রবর্তী। প্রদর্শনী দেখা যাবে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত, রোজ ১০-৫।

কুভেম্পু
রবীন্দ্রনাথের আদর্শের ভক্ত ছিলেন মানুষটি, আর বিশ্বাসী ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দে। কুপ্পালি বেঙ্কটাপ্পাগৌড়া পুট্টাপ্পা। কন্নড় এই রাষ্ট্রকবি লিখতেন কুভেম্পু ছদ্মনামে। কর্নাটকের রাজ্যসংগীতটিও তাঁরই লেখা। চিকমাগালুরের কোপ্পা তালুকে জন্ম (১৯০৪-’৯৪), শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রথমে ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যচর্চা শুরু করলেও ফিরে আসেন মাতৃভাষায়, তার উন্নতির জন্যে তৈরি করেন এক সংস্থা, আজ তা কুভেম্পু ইনস্টিটিউট অব কন্নড় স্টাডিজ। কন্নড় ভাষার বহু নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে তাঁর হাতে। লিখেছেন অজস্র কবিতা প্রবন্ধ নাটক জীবনী এবং শিশুদের জন্যেও। পেয়েছেন জ্ঞানপীঠ পদ্মভূষণ পদ্মবিভূষণ, তাঁকে নিয়ে ছবিও করেছেন গিরিশ কারনাড। তাঁকে নিয়ে ১০-১১ সেপ্টেম্বর আলোচনাচক্র সাহিত্য অকাদেমি-তে। বলবেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্বপন মজুমদার মীরা চক্রবর্তী বিবেক রাই প্রধান গুরুদত্ত প্রমুখ।

দেশের কথা
পরাধীন ভারতে চরমপন্থী বিপ্লবীদের অবশ্যপাঠ্য ছিল সে বই। ১৯০৪-এর ১৮ জুন প্রকাশিত হয় দেশের কথা। লেখক সখারাম গণেশ দেউস্কর (১৮৬৯-১৯১২)। বীরভূমের করোঁ গ্রামে জন্ম, পরিবারের আদি নিবাস ছিল মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার দেউস গ্রামে। সখারাম ‘হিতবাদী’ পত্রিকায় প্রুফ সংশোধনের কাজে যুক্ত হয়ে পরে সম্পাদকের সহকারী হন।
দেশের কথা বার বার নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করেছিল সরকার। প্রথম নিষিদ্ধকরণের শতবর্ষ সদ্য অতিক্রান্ত, এটির নতুন সংস্করণ প্রকাশ করছে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র ও সূত্রধর, সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ভূমিকা-সহ। ১০ তারিখ সন্ধ্যায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে বইটির প্রকাশ অনুষ্ঠানে থাকছে এ নিয়ে আলোচনাও, বলবেন সব্যসাচী ভট্টাচার্য, নিখিলেশ গুহ ও গৌতম ভদ্র।

শতবর্ষে ‘রাজা’
রবীন্দ্রনাথের ‘রাজা’। একশো বছর আগে লেখা এ-নাটক আজও সমান প্রাসঙ্গিক। অনেকের কাছেই এ-নাটক অগ্নিশুদ্ধির ভিতর দিয়ে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার নাটক। ‘রাজা’ যেমন বহু বার অভিনীত হয়েছে, তেমনই পাঠও হয়েছে বহু বার। বহু গবেষক আলোচনা করেছেন। তবু এ পর্যন্ত কোনও রেকর্ডিং হয়নি নাটকটির, শতবর্ষ উপলক্ষে সে-দায়িত্ব নিয়েছে হিন্দুস্থান রেকর্ড, তাদের এই অডিয়ো-সিডিটি প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ, ৭ সেপ্টেম্বর জ্ঞান মঞ্চে। সিডি-র জন্যে নাটকটির সম্পাদনা, সংগীত ও পরিচালনা করছেন দেবাশিস রায়চৌধুরী। রাজার ভূমিকায় সব্যসাচী চক্রবর্তী, সুদর্শনা চৈতালি দাশগুপ্ত, সুরঙ্গমা এ-প্রজন্মের সুগায়িকা রোহিণী রায়চৌধুরী, আর ঠাকুরদা পরিচালক স্বয়ং। সিডি প্রকাশের পর ‘রাজা নাটকের গান’ শোনাবেন দেবাশিস ও রোহিণী রায়চৌধুরী।

সজীব ইতিহাস
সদ্য প্রকাশিত ভূমধ্যসাগর-এ সম্পাদক জয়া মিত্র লিখছেন, “নিঃশব্দে কিছুটা অন্তরালবর্তীভাবে, ‘ঘরকন্না’র হাতে কলমে প্রয়োগশালা এই রান্নাঘর মানুষের সভ্যতার এক সজীব ইতিহাস।”... ওই সজীব ইতিহাসেরই বেশ কিছু প্রামাণিক রচনা বিশ্বেশ্বরী পঞ্চাধ্যায়ী-র ‘ঘরের কথা’-সহ বিশ্বেন্দু নন্দ সুজিত চৌধুরী মুকুন্দ গায়েন-এর। পুরনো অথচ চিরকালীন সত্যটুকু স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য অজয় গুপ্ত-র ‘পুরনো চাল’-এ আলামোহন দাশ-এর ‘আমার জীবন’। ময়ূরাক্ষী নদীর ইতিবৃত্ত গিরিজাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আর মলয় মুখোপাধ্যায়ের কলমে। অন্য দিকে অনুষ্টুপ-এর (সম্পা: অনিল আচার্য) সাম্প্রতিক সংখ্যায় দু’টি ক্রোড়পত্রের একটিতে রবীন্দ্রনাথ, তাতে অবশ্যপাঠ্য সুবিমল লাহিড়ীর ‘নামকরণ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’, তপন রায়ের বাল্মীকিপ্রতিভা: রবীন্দ্রনাথের ‘গীতিনাট্য’, সমীর সেনগুপ্তর ‘রবীন্দ্রনাথ কি মদ্যপান করতেন?’ প্রবন্ধাদির মধ্যে উল্লেখ্য প্রদীপ্ত গুপ্তরায়ের ‘মহেন্দ্রলাল সরকার, সমকালীন বিজ্ঞানচর্চা ও ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানসভা’, অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পশ্চিম রাঢ়ের রামায়ণী গান ও লুপ্তপ্রায় গায়েন-বংশ’, আর আমিনুল ইসলামের ‘উনিশ শতকের বাঙালি হিন্দু কবিদের চিন্তা-চেতনায় মুসলমান-ভাবনা’।

১৮০-তে পা
লন্ডনের মিশনারিদের উদ্যোগে ১৮৩২-এ আলিপুরে স্থাপিত হয় ‘লন্ডন মিশনারি সোসাইটি’ নামে এক আবাসিক বিদ্যালয়, ১৮৩৭-এ তা উঠে আসে ভবানীপুরে। অল্প দিনেই জনপ্রিয় স্কুলটিতে কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চাও ছিল পাঠ্যক্রমে। লেডি কারমাইকেল ১৯১৩-র ২৪ নভেম্বর ৩ আশুতোষ মুখার্জি রোডে বর্তমান ভবনটির উদ্বোধন করেন। ১৯১৬-র মার্চে ওয়েসলিয়ান মিশন ও ব্যাপ্টিস্ট মিশন-এর সঙ্গে মিশে এটি ‘ইউনাইটেড মিশনারি গার্লস হাইস্কুল’ নামে পরিচিত হয়। সেই বছরেই স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পায় এবং এর ছাত্রীরা প্রথম ম্যাট্রিকে বসে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীন বাংলা মাধ্যমের এই স্কুলে বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এখনও সকালে পিয়ানোর সুরে সুর মিলিয়ে প্রার্থনা-সংগীত দিয়ে স্কুল বসে। ১২ সেপ্টেম্বর ১৮০ বছরে পা দেবে স্কুলটি, সেই উপলক্ষে ওই দিন বিকেল পাঁচটায় সেন্ট পলস্ ক্যাথিড্রাল গির্জায় আছে ‘থ্যাঙ্কসগিভিং’। আগামী এক বছর ধরে চলবে নানা অনুষ্ঠান।

শহিদশিখর
হোলি খেলেছিল যারা আমার মেয়ের রক্ত নিয়ে
আগুন জ্বালিয়ে যারা শবের উপরে নেচেছিল
এই শেষ অন্ধকারে তাদের সবার কথা বলি...

শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন গত শতকের উপান্তে। ‘‘তাঁর এই ‘শহিদশিখর’ কবিতাটি উদ্দীপিত করেছে আমাকে।” জানালেন নাট্যকার চন্দন সেন, এ-কবিতার ভিত্তিতে এবং জমিলুঠ ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে ওই একই নামে তাঁর নতুন নাটক শহিদশিখর। এটি ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় অ্যাকাডেমি-তে মঞ্চস্থ করছে হযবরল, রাজা লাহিড়ীর নির্দেশনায়। অন্য দিকে ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৭টায় নাট্য আকাদেমি-র তৃপ্তি মিত্র মঞ্চে অভিনীত হবে টোটাল থিয়েটার-এর বিশ্বাসঘাতকতা, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায়। শান্তনুর সঙ্গে অভিনয় করছেন ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’-খ্যাত প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। কৌশিক সেনের লেখা যে-ক’টি নিবন্ধের ভিত্তিতে তৈরি এ-নাটক, তার একটিতে তিনি লিখছেন ‘রঙ পালটানোর সঙ্গে, ক্ষমতার একরৈখিক চিৎকার পালটাবে না।’

নাটকের টানে
ভারতের আটটি প্রদেশের কয়েকশো শিশু-কিশোর। ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন পোশাক, মিলনের সূত্রটা কিন্তু একটাই, নাটক। এ শহর ও হাওড়ার মঞ্চে ৬-১৩ সেপ্টেম্বর ‘নর্থ-ইস্ট চিলড্রেন্স থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল’। আয়োজক ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা ও শিশু কিশোর আকাদেমি। আগামিকাল মিনার্ভায় উৎসবের সূচনা করবেন মনোজ মিত্র, প্রধান অতিথি দেবশঙ্কর হালদার। তার পরে আট দিনের উৎসব চলবে মিনার্ভা, পূর্বশ্রী, রামগোপাল মঞ্চ ও হাওড়া শরৎ সদনে। অন্য দিকে, আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় ‘মুখোমুখি’। ‘ইচ্ছে’ ছবির পরিচালক নন্দিতা রায় শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্তের সঙ্গে কথায় রাজা সেন।

শহিদশিখর
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটি কাব্যগ্রন্থের শীর্ষনাম ছিল, জঙ্গল বিষাদে আছে। আর জঙ্গলমহল? প্রান্তিক সেই এলাকার বিষণ্ণতা সম্প্রতি দেখা দিল গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারি-তে। শিল্পী মৃণাল মণ্ডল। প্রদর্শনীর নাম ‘শিকড়’। শিল্পীর নিজস্ব শিকড় তো বটেই, তার অনুষঙ্গে কি সভ্যতারও শিকড়সন্ধান চলে তাঁর ইনস্টলেশন, ভাস্কর্য এবং ভিডিও-তে। মূলত মিশ্রমাধ্যমে কাজ। দেওয়ালে চলমান চিত্রমালা। কাগজ-মণ্ডের উৎপাটিত বৃক্ষ, তার ছায়ায় অজস্র নাম। প্রদর্শনীটি অন্য ধাঁচের ছিল নিঃসন্দেহে।

কবির ছবি
রবীন্দ্রনাথের আলোকচিত্র এবং বিভিন্ন শিল্পীর আঁকা তাঁর প্রতিকৃতির মোট সংখ্যা এখনও নির্ণয় করে ওঠা যায়নি। দেশবিদেশের শিল্পী তালিকায় যোগ হল আরও এক তরুণের নাম, কৃষ্ণাজিৎ। তাঁর আঁকা ২০টি রবীন্দ্র-প্রতিকৃতি নিয়ে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় আজ শুরু হচ্ছে একটি প্রদর্শনী, ‘তব মুখপানে’। সঙ্গে জ্যোতিরিন্দ্র-গগনেন্দ্র-অবনীন্দ্রনাথ, নন্দলাল, মুকুল দে, যামিনী রায় থেকে শুরু করে গণেশ পাইন, রবীন মণ্ডল, হিরণ মিত্র প্রমুখের আঁকা ৪০টি রবীন্দ্র-প্রতিকৃতির প্রিন্ট ও আনুষঙ্গিক ইতিহাস। চলবে ৭ তারিখ পর্যন্ত, ২-৮টা। সূচনায় কসমিক হারমনি থেকে প্রকাশিত হবে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম ও রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়নের ইতিহাস নিয়ে একটি পুস্তিকা ‘আমার আপন গান’। সমগ্র আয়োজনে সহযোগী ‘থার্ড আই’।

লোকশিল্প
এগারো বছর আগে প্রকাশিত হয় তারাপদ সাঁতরার পশ্চিমবঙ্গের লোকশিল্প ও শিল্পীসমাজ। ২০০৩-এ প্রয়াত হন পশ্চিমবঙ্গের মন্দিরস্থাপত্য ও লোককৃতির এই আশ্চর্য ক্ষেত্রসন্ধানী। ইংরেজিতে প্রবন্ধ লিখেছেন, কিন্তু কোনও বই এত দিন ছিল না। এ বার শঙ্কর সেনের অনুবাদে নিয়োগী বুকস প্রকাশ করল ফোক আর্টস অব ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যান্ড দি আর্টিস্ট কমিউনিটি। ভারতীয় জাদুঘরের উদ্যোগে ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে বইটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করবেন বরুণ দে।

হেরো নং ওয়ান
৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭। অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নান্দীকার’ থেকে বেরিয়ে গড়লেন নতুন নাট্যদল ‘নান্দীমুখ’। অতঃপর, ‘পাপ-পুণ্য’ বা ‘তেত্রিশতম জন্মদিবস’-এর মতো স্মরণীয় প্রযোজনা দিয়ে পথচলা শুরু। ওদের সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘হেরো নং ওয়ান’-এর বিষয় অধুনা বিষম জনপ্রিয় ‘ট্যালেন্ট হান্ট শো’! জয়-পরাজয়ের যে বিচিত্র কিস্সায় আজ গণমন আকুল, ‘রিয়ালিটি’ বস্তুত ‘শো-বিজ’-এ পর্যবসিত, তাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় অশোক চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত এই প্রযোজনা। দর্শক যদি জেতা-হারার প্রশ্নটিকে বেঁচে থাকার প্রেক্ষিতে রেখে চিন্তা করেন, তা হলেই প্রযোজনা সার্থক, জানাচ্ছে ‘নান্দীমুখ’! জন্মদিনেই এ নাটক অভিনীত হবে অ্যাকাডেমিতে।

হঠাৎ হাওয়ায়
বিশপ লেফ্রয়-এ মানিকমামার ঘর। বসে কাজ করছেন। আমিও আছি, জড়োসড়ো। কাজ করতে করতে বললেন, ক্রিকেট খেলো, তাই না? মৃদুস্বরে সম্মতি জানালাম। উনি হাতের কাছে ড্রয়ার টানলেন, কী যেন নেবেন, তারপর আচমকা আমার দিকে উড়ে এল একটা সিগারেটের প্যাকেট। ঝাঁপিয়ে সেটা ধরতেই ওঁর মুখে হাসি, এই তো, ক্রিকেটারের রিফ্লেক্স!’ এমন অজস্র স্মৃতি নিয়ে মহানগরে বাস করছেন তিনি। ভীষ্ম গুহঠাকুরতা! ‘দক্ষিণী’-র প্রতিষ্ঠাতা শুভ গুহঠাকুরতার পুত্র, হঠাৎ করেই ‘দক্ষিণী’-র ‘নষ্টনীড়’ অভিনয়ের সুবাদে ক্রিকেটের ড্রেসিংরুম থেকে মঞ্চের মেক-আপ রুম! ‘অমল’ হলেন তিনি, এবং সেখানেই অভিনয়ের শেষে তপন সিংহের প্রস্তাব, ছবিতে অভিনয় করবে? বাবার অনুমতি নিয়ে শুটিং ফ্লোর, ছবির নাম ‘রাজা’! তপন সিংহের ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ থেকে সত্যজিতের একাধিক ছবি, কাজ করেছেন তিনি। অথচ, সবই যেন হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা! ‘না হলে কখনও
ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
মোহরদি দুম করে একদিন বলেন, চল, আমার সঙ্গে পিয়ানো বাজাবি! বলেই সোজা এইচ এম ভি-র রেকর্ডিং-এ! অথচ, আমি পিয়ানো শিখিইনি কখনও!’, বললেন ভীষ্ম। এখন ছবি আঁকেন, পূর্ণ স্ব-শিক্ষিত উপায়ে এবং ইচ্ছের বশে। প্রিয় গন্তব্যস্থান দক্ষিণেশ্বর! কোনও আক্ষেপ নেই, হাসিটি প্রাণখোলা, বয়সের সীমারেখা উড়িয়ে দেন নিমেষে। মহানগরে সানন্দে জেগে আছেন তিনি। সুখী রাজকুমারের মতো।

শিল্পী-স্মরণ
আমার সঙ্গীত চেতনার জন্ম বেদনাবোধ থেকেই। গান আমার কাছে কোনও দিনই শৌখিন ভাববিলাসের বস্তু নয়, নিঃসহায় হৃদয়ের আশ্রয়।’ লিখেছিলেন ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। আর বাংলা গানের ইতিহাস জানে, সেই বেদনা কী ভাষায় ভরে উঠেছে তাঁর গানে। জন্ম ১৯২২-এর ১০ সেপ্টেম্বর। ১৬ বছর বয়সে প্রথম রেডিয়োতে গান, ‘জোছনা রাতে কেন ডাকে বাঁশিতে রাধা’। দু বছর পরে প্রথম রেকর্ড, পায়োনিয়ার কোম্পানি থেকে, ‘যদি ভুলে যাও মোরে’। ৫৪ বছরের সঙ্গীতজীবনে বেসিক রেকর্ড শতাধিক, ছায়াছবির গান গেয়েছেন প্রায় ১২০০। সিনেমায় প্রথম একক নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে গান, ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিতে, ‘রাধে ভুল করে তুই’ গানটি। পাশাপাশি ছায়াছবিতে অভিনয়ও করেছেন, ‘পাশের বাড়ী’ ‘নববিধান’, ‘লেডিস সিট’, ‘অদৃশ্য মানুষ’ ‘শ্বশুরবাড়ী’ এই পাঁচটি ছবিতে। এ হেন শিল্পীর সব গান এখনও সংরক্ষণ করে ওঠা যায়নি। তবে সে চেষ্টা চালাচ্ছেন ‘ধনঞ্জয় গীতিমন্দির’ ও ‘ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য স্মরণ সংসদ’। পাশাপাশি তাঁরা ধনঞ্জয়ের বিখ্যাত গানগুলির স্বরলিপিও প্রকাশ করছেন। এ বছর শিল্পীর ৯০ তম জন্মদিনে তপন থিয়েটারে আয়োজিত হয়েছে ধনঞ্জয় স্মরণ অনুষ্ঠান। কথায় গানে শিল্পীর সেই স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে তাঁর গানের লাইভ অনুষ্ঠানের সিডি ও তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্রের ভিসিডি, জানালেন শিল্পীর পুত্র দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
   


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.