|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ৪... |
|
আসছেন ‘দেবী চৌধুরাণী’ |
বঙ্কিমচন্দ্র, রাজ চক্রবর্তী, আর ভেঙ্কটেশ। তিনে মিলে তৈরি হচ্ছে টালিগঞ্জের ইতিহাসে
এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি বাজেটের ছবি। লিখছেন ইন্দ্রনীল রায় |
ঘরের ছেলের ঘরে ফেরা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস। এবং সেই সঙ্গে টালিগঞ্জে এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি বাজেটের ছবি করার অঙ্গীকার। এই তিনের মিশেলে ইন্ডাস্ট্রি দারুণ উত্তেজিত।
আবারও হিট জুটি রাজ চক্রবর্তী আর ভেঙ্কটেশ ফিল্মস একসঙ্গে। রাজের সঙ্গে ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শেষ ছবি ছিল ‘দুই পৃথিবী’। ইতিমধ্যে কেটে গেছে এক বছর। তাঁরা একসঙ্গে একটাও ছবি করেননি। কিন্তু এ বার আবারও তাঁরা একসঙ্গে। ‘দেবী চৌধুরাণী’র দৌলতে। এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বাংলার পটভূমিতে ক্ষীণ ইতিহাসাশ্রিত উপন্যাসকে চিত্রায়িত করতে আবারও ভারত-বাংলাদেশ যুগ্ম প্রযোজনা। ঠিক যেমনটা হয়েছিল লালন ফকিরের জীবন নিয়ে লেখা উপন্যাস গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘মনের মানুষ’-এর বেলায়। ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সঙ্গে ছবি করতে আসাটা রাজের কাছে অনেকটা ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার মতোই আনন্দের ব্যাপার। রাজের গলায়ও তাই উৎসাহের ছোঁয়া, “ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্তদাকে বলেছি মৌলিক কাহিনি নিয়ে কাজ করতে চাই এ বার। দক্ষিণ ভারতীয় ছবির রিমেক আর করব না।”
ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্ত মোহতাও অত্যন্ত উত্তেজিত ‘দেবী চৌধুরাণী’ নিয়ে। “হ্যাঁ, রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে আমরা ‘দেবী চৌধুরাণী’ করছি। আসলে প্রথমে আমাদের ‘দেবী চৌধুরাণী’ করার কথা ছিল টিভির জন্য। কিন্তু সেটা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তবে বিষয় হিসেবে ‘দেবী চৌধুরাণী’ এতটাই আকর্ষণীয় ছিল আমাদের কাছে যে, ওখানেই ব্যাপারটাকে ছেড়ে দিতে চাইনি। বরং আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ছবি তৈরি করাটাই ঠিক করি। এবং এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এটুকু বলতে পারি, ‘দেবী চৌধুরাণী’ টালিগঞ্জে তৈরি এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি বাজেটের ছবি হবে,” শ্রীকান্তের বক্তব্য।
এটা ঘটনা যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে টালিগঞ্জে হঠাৎ যেন সাড়া পড়ে গিয়েছে। এক দিকে তরুণ মজুমদার ‘দুর্গেশনন্দিনী’ তৈরি করছেন ছোট পর্দার জন্য, অন্য দিকে বড় পর্দায় রাজ চক্রবর্তী প্রস্তুত হচ্ছেন ‘দেবী চৌধুরাণী’ করবেন বলে। |
|
১৯৭৪-এর ‘দেবী চৌধুরাণী’র দৃশ্য |
‘দেবী চৌধুরাণী’র মুখ্য চরিত্রে কারা কারা অভিনয় করবেন এখনও ঠিক না হলেও গবেষণার কাজ চলেছে পুরোদমে। কিন্তু কে হবেন দেবী চৌধুরাণী? ১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দীনেন গুপ্ত পরিচালিত ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির নায়িকা ছিলেন সুচিত্রা সেন। নায়ক ব্রজেশ্বরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। এ ছাড়াও ছবির অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন শেখর চট্টোপাধ্যায়, বসন্ত চৌধুরী, ছায়া দেবীর মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা। তাই নতুন করে ‘দেবী চৌধুরাণী’ করা মানেই আগের ছবিটির সঙ্গে তুলনা অনিবার্য। তবে তার জন্য রাজ মনে মনে প্রস্তুত। এবং সেই মাপেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই ছবির কাজ শেষ হলে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলার জীবনী নিয়ে ইতিহাসাশ্রিত একটি ছবিও করবেন রাজ, সেই ভেঙ্কটেশ ফিল্মসেরই প্রযোজনায়। ‘দেবী চৌধুরাণী’র পাশাপাশি সিরাজ-উদ্-দৌলা নিয়েও চলেছে সবিস্তার গবেষণা। “সিরাজ খরচের দিক থেকে অনেক, অনেক বড় মাপের ছবি হবে। ‘দেবী চৌধুরাণী’তে যেখানে ২০-টা ঘোড়া হলে চলবে, সেখানে সিরাজ করতে কম সে কম শ’তিনেক ঘোড়া দরকার। সেই জন্যই ‘দেবী চৌধুরাণী’ আগে করছি। তার পরে সিরাজ।” ইন্ডাস্ট্রিতে এমনও শোনা যাচ্ছে, বাংলায় যে বিশাল আকারে সিরাজ-উদ্-দৌলার জীবনী নিয়ে ছবি হতে চলেছে, সেটা বলিউডের ‘জোধা আকবর’-এর টলিউডি জবাবও হতে পারে। |
সিরাজের জীবন নিয়ে এটিই প্রথম ছবি। যদিও ১৯৭৩ সালে বিশ্বজিৎ ও সন্ধ্যা রায় অভিনীত ‘আমি সিরাজের বেগম’ নামে একটি ছবি দর্শকমনে সাড়া ফেলেছিল। অবশ্য সেটি পুরোপুরি ইতিহাসাশ্রিত ছিল না। সে ছবিতে অন্য সব চরিত্রে ছিলেন পাহাড়ি সান্যাল, বিকাশ রায়, শেখর চট্টোপাধ্যায়, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাসবী নন্দী প্রমুখ।
‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির নামভূমিকায় রাজ বেশ কয়েক জন নায়িকাকে ভাবলেও এখনই পরিচালক এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাইছেন না।
তবে এটুকু বলাই যায় যে ‘দেবী চৌধুরাণী’ আর সিরাজ-জীবনী যদি ছায়াছবি হয়, তা হলে সাম্প্রতিক বাংলা ছবির ইতিহাসে তা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ছবি। স্বল্প বাজেট, স্টাইলিশ, বুদ্ধিদীপ্ত বাংলা ছবির যে ধারাটি এখন চলছে তার থেকে সরে ধ্রুপদী এবং রাজকীয় কিছু ঘটবে। |
নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা |
|
|
|
|
|
|