|
|
|
|
|
|
|
একা এবং অদ্বিতীয় |
উত্তম-মুহূর্ত |
সত্তর দশকে কবিতা সিংহের সঙ্গে কথোপকথনে উত্তমকুমার জানিয়েছিলেন: ‘মহানায়ক’! হ্যাঁ শুনেছি টার্মটা, শুনব না কেন?... আমার ধারণা কি জানেন, যারা একটু টেঁকসই লোক মানে অনেকদিন থেকে যায়, তাদেরই নামের পাশে বোধহয় লোকে ‘মহা’ শব্দটা জুড়ে দিতে ভালবাসে। রবীন্দ্রনাথকে শুধু কবি বললে কোনো ক্ষতি ছিল না। মহাকবি বলে বোধহয় বহুদিন বহু লিখেছিলেন বলে। এ পর্যন্ত বলেই সরাসরি রবীন্দ্র-প্রসঙ্গে চলে যান উত্তম: ‘রবীন্দ্রনাথ! কী বলব? কতটুকু বলা যায়। প্রতি মুহূর্তেই তো রবীন্দ্রনাথ। ওঁর গান আমাকে যেন বাঁচিয়ে দেয়।’ বাঙালিকে আজও যেমন নিয়ত বাঁচিয়ে রাখছেন রবীন্দ্রনাথ, তেমনই এখনও বাঙালিকে মুগ্ধ করে রেখেছেন উত্তমকুমার। আসন্ন ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন। নিঃসন্দেহে ফিল্মের অ্যাক্টিং যে ঠিক কী, তার নানান বাঁক এবং বাঁক বদলের সাক্ষী হয়ে থাকল তাঁর অভিনীত ছবি, এবং অবশ্যই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। সেই জীবনেরই বেশ কিছু নিভৃত মুহূর্ত লেন্স-বন্দি করে রেখেছিলেন নিমাই ঘোষ। এত দিন পর সে সব স্থিরচিত্র বেরোচ্ছে বই হয়ে উত্তম মুহূর্ত (কোল-কথা, ১৫০০.০০)। |
|
সারা সত্তর দশক জুড়ে তোলা এই ছবিগুলিতে তাঁর ফিল্ম-স্টিল তো নেই-ই, এমনকী তাঁর নায়িকারাও নেই, একা এবং অদ্বিতীয় বিরাজমান তিনিই। ‘যে-সময়কালে এ সব ছবি তোলা সেই সময়ে উত্তমের জীবনের ঘটনাবলিরও ছাপ থাকে মুখে, মুডে, মনস্তত্ত্বের মুহূর্তে। তখন, ঠিক তখনই, নিমাই ঘোষের ক্যামেরা কাজ করে এক মায়াদর্পণের।’ লিখেছেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য, এ-বইয়ের ছবির সঙ্গে গদ্যকার তিনিই। ‘যখনই অড-অ্যাঙ্গেলে ওঁর ছবি তুলতে গেছি, ঠিক নিজের মতো করে অ্যাঙ্গেল তৈরি করে নিয়েছেন, আসলে ক্যামেরার লেন্স ছিল ওঁর কাছে আয়না-র মতো।’ উত্তম সম্পর্কে অভিজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন সত্যজিতের ফোটো-বায়োগ্রাফার, সত্যজিৎকেই এ-বই উৎসর্গ করেছেন নিমাই ঘোষ। বইটি এবং বইটি থেকে নির্বাচিত কিছু ছবির এক প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় আর এন টেগোর সেন্টার-এ, আইসিসিআর ও পি সি চন্দ্র-এর যৌথ উদ্যোগে।
|
বিস্মৃত |
ঊনবিংশ শতকের বহু কৃতবিদ্য অথচ বিস্মৃত মানুষের অন্যতম নীলমণি মিত্র (১৮২৮-’৯৪)। কলেজের পাঠ শেষ করে প্রথম বাঙালি হিসেবে রুড়কি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করেন। সরকারি ইঞ্জিনিয়র হিসেবে শুরু করলেও পরে স্বাধীন ভাবে স্থপতি হিসেবে কাজ করেছেন। বাগবাজারে নন্দলাল বসুর বাড়ি, যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের ‘প্রাসাদ’ ও এমারেল্ড বাওয়ার-সহ কলকাতার বহু বিখ্যাত বাড়ি তৈরি করেন তিনি। সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ, মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন, কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর বাড়ি তৈরির জন্য কোনও পারিশ্রমিকও নেননি। মধুপুরে বাঙালি উপনিবেশের পথ দেখান তিনিই। ২৫ অগস্ট সন্ধে সাড়ে ছ’টায় তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি ও স্মারক-ফলক বসানো হবে তাঁরই নামাঙ্কিত টালার নীলমণি রো-তে। থাকবেন হেরিটেজ কমিশনের সভাপতি শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, পুরসভার চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইতিহাসবিদ হিমাদ্রিশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। ‘পাইকপাড়া-টালার ঐতিহ্য ও নীলমণি মিত্র’ শীর্ষক নীলমণি মিত্র স্মারক বক্তৃতা দেবেন কলকাতা-গবেষক দেবাশিস বসু। অনুষ্ঠানে জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের লেখা সর্ব্বপ্রথম বাঙ্গালী এঞ্জিনীয়র নীলমণি মিত্র বইটি প্রকাশ করবেন অনিন্দ্য কারফরমা।
|
কাজের ফাঁকে |
স্কুলে পড়ার সময়ে ছবি আঁকায় ‘হাতেখড়ি’ দেন কমলকুমার মজুমদার। কিন্তু কৈশোরের সেই স্বপ্ন থমকে গিয়েছিল ‘কেরিয়ার’ তৈরির চাপে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের পাঠ নিয়েছেন। পড়িয়েছেন এডিনবরা-র রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস্-এ। বর্তমানে ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ-এর শল্যচিকিৎসা বিভাগের প্রধান। প্রতিষ্ঠিত শিশু চিকিৎসক পার্থপ্রতিম গুপ্ত এত দায়িত্ব সামলেও কাজের ফাঁকে এখন আবার ছবি আঁকেন। তারই প্রদর্শনী রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাবে, ২৬-২৯ অগস্ট। উদ্বোধনে শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। ছবি দেখে মুগ্ধ যোগেন চৌধুরীও। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “২০০৭ সালে ফের শুরু করি আচমকাই। তারপরে সেই ছবি দেখে অনেকেই ধরলেন প্রদর্শনী করার জন্য।” সমস্ত প্রদর্শনীটি উপস্থাপনা করবেন সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
|
মেলবন্ধন |
রবি কিরণে কবি শক্তি। রবীন্দ্র জন্ম সার্ধশতবর্ষে ‘প্রবাহিণী’র পরিবেশনায়, পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় এবং প্রযোজনায়, পূর্বাশা প্রেক্ষাগৃহে, ২৪ অগস্ট এই নামেই মেলবন্ধন ঘটতে চলেছে রবীন্দ্রনাথের গান এবং শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের পদ্যের। এতে থাকবে এই দুইয়ের প্রাসঙ্গিক ও পারস্পরিক গ্রন্থনা। সংগীতে অভিরূপ গুহঠাকুরতা ও এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়, আবৃত্তি ও পাঠে নাতাশা দাশগুপ্ত ও আশিস ঘোষ। থাকবে শক্তির কণ্ঠে কিছু রবীন্দ্রসংগীতও। এই প্রযোজনার নেপথ্যে যে সুরটি বেজে উঠবে, তা হল রবীন্দ্রসংগীতের পাঠযোগ্যতা ও শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার গীতিময়তার আলেখ্য।
|
জন্মতিথি |
একদিকে কট্টর মাৎসিনিপন্থী, অপর দিকে মার্কসীয় দর্শনে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য, স্বদেশি যুগের বিপ্লবী ভূপেন্দ্রনাথ দত্তকে (১৮৮০-১৯৬১) এই ভাবেই চেনে ভারতবাসী। স্বামী বিবেকানন্দের ছোট ভাই কৈশোর থেকেই বেছে নেন বিপ্লববাদের পথ। স্বদেশি আন্দোলনের সময় ‘বিপ্লবী যুগান্তর’ ও ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকা প্রকাশের দায়ে জেল খাটতে হয় তাঁকে। মুক্তির পর গোপনে প্রথমে আমেরিকা ও সেখান থেকে ইউরোপ যান। দেশে ফিরে কংগ্রেসের বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিটির সদস্য এবং পরে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সদস্যও হন। মধ্যম-অগ্রজ মহেন্দ্রনাথ (১৮৬৮-১৯৫৬) প্রথম জীবনে ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের লীলা-পার্ষদ। পরে, বিবেকানন্দের পরামর্শে বিলেতে গিয়ে দর্শন, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ঘুরেছেন সারা ভারত। সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন ৯০টিরও বেশি গ্রন্থ। মহেন্দ্র পাবলিশিং কমিটি আজ ও কাল, ২২ ও ২৩ অগস্ট যথাক্রমে ভূপেন্দ্রনাথ ও মহেন্দ্রনাথের জন্মতিথি পালনের আয়োজন করেছে ৩/৭ সাহিত্য পরিষদ স্ট্রিটের ‘মহেন্দ্র প্রজ্ঞাপীঠ’-এ।
|
কবিতার কলকাতা |
কলকাতার ‘জন্মদিন’ আর ২৪ অগস্ট নয়। তবু সেই দিনই এ শহরের মঞ্চে উদ্ভাসিত হবে কবিতার কলকাতা। পুরনো-নতুন কবিতায় কলকাতাকে সে দিন শিশির মঞ্চে ধরতে চান বাচিক শিল্পী সুকুমার ঘোষ। এ শহরের তৃতীয় আবৃত্তি সংগঠনটি তাঁরই তৈরি, ‘কবি ও কণ্ঠ’। শুরু সেই ১৯৭২-এ। আর এই ২০১১-য় তাঁর প্রথম পূর্ণাঙ্গ একক অনুষ্ঠান। এত দিন কোথায় ছিলেন? “ছিলাম এই শহরেই, আবৃত্তির জগতে। কিন্তু একক করার ভরসা পাইনি। বলা ভাল তৈরি ছিলাম না। এখনও যে পুরোপুরি তৈরি তা বলব না। তবু একটা চেষ্টা করছি। কলকাতাটাই মূল বিষয়। তা ছাড়া থাকবে প্রেম, এলোমেলো ভাবনা এবং কবিতা।” বললেন শিল্পী। এবং কে না জানে কবিতা আর প্রেম তো আসলে কলকাতারই আর এক নাম!
|
ছোটদের শ্রদ্ধা |
রবীন্দ্র আদর্শকে মনে রেখেই যুগল শ্রীমলের উদ্যোগে যাত্রা শুরু হয়েছিল পুতুল-জাদুঘর নেহরু চিলড্রেনস মিউজিয়ামের। আছে নাচ-গান-আঁকা-আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রও। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষে শিশু-শিক্ষার্থীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাল নিজেদের সৃষ্টি দিয়ে। সংগ্রহশালার প্রাচীরে ওরা ফুটিয়ে তুলেছে রবীন্দ্রনাথের জীবন-কাহিনি নিয়ে একটি ম্যুরাল। এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে ‘রবিঠাকুরের পাঁচালি’ শীর্ষক একটি ছোট পুস্তিকা। শুক্রবার, বিকেল ৫টায় ছোটদের আঁকা এ সব ছবি নিয়ে এক প্রদর্শনী গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়। প্রকাশ পাবে পুস্তিকাটিও। সূচনায় থাকবেন শিল্পী রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সমীর আইচ এবং শিশু-কিশোর আকাদেমির সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। প্রদর্শনী রবিবার পর্যন্ত, ৩-৮টা রোজ।
|
হাতযশ |
দার্জিলিঙে প্রায় শুটিং বন্ধ হওয়ার জোগাড়! উদ্বিগ্ন সুব্রত মিত্র এসে সত্যজিৎ রায়কে জানালেন, ফিল্মের র-স্টক কম পড়ে গেছে। ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’র কাজ চলছিল, ১৯৬১। কলকাতায় খবর পাঠিয়ে ফিল্ম আনতে গেলে বন্ধ হবে শুটিং, বসে যাবে গোটা ইউনিট, সময়ের সঙ্গে অর্থেরও অপচয়। প্রায় ‘আসমান সে আয়া ফরিস্তা’র মতোই পাশে এসে দাঁড়ালেন শাম্মী কপূর। ‘প্রফেসর’-এর শুটিংয়ে তিনিও তখন দার্জিলিঙে, অসম্ভব সত্যজিৎ-ভক্ত এই সুপারস্টারের হাতযশেই তাঁর ইউনিট থেকে তৎক্ষণাৎ ফিল্ম নিয়ে ঘাটতি মেটালেন সত্যজিৎ। শুটিং চালু রইল। ‘পরে কলকাতা থেকে ফিল্ম এনে ফেরতও দিলেন বাবা। শুটিংয়ে আমিও ছিলাম, আমার বয়স তখন আট।’ স্মৃতি থেকে বলছিলেন সন্দীপ। ‘‘ফের শাম্মী-র সঙ্গে আশির দশকে মুম্বইয়ে ওঁর বাড়িতে বহুক্ষণ কাটিয়েছি কিশোরকুমারকে নিয়ে ‘জিন্দেগি এক সফর’ ছবির শুটিংয়ে’।” তেমনই এক মুহূর্তের ছবি, হীরক সেনের ক্যামেরায়।
|
স্মরণ |
বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্রকারদের অন্যতম তারেক মাসুদ ছিলেন মুক্তি আর তারুণ্যের তুমুল সমর্থক। স্ত্রী-সহকর্মী ক্যাথরিনকে নিয়ে বেশ কয়েক বারই এসেছেন কলকাতায়, এখানে তাঁর নতুন ছবির শুটিং হওয়ারও কথা ছিল। বাংলাদেশে সে-ছবির লোকেশন দেখতে গিয়েই তো দুর্ঘটনায় অকালে চলে গেলেন। কয়েক বছর আগে যে বার এসেছিলেন সিনে সেন্ট্রাল-এর আন্তর্জাতিক ফিল্মোৎসবে, সে বারে তাঁর ‘অন্তর্যাত্রা’ প্রথম দেখানো হয়। তাঁকে স্মরণ করবে সিনে সেন্ট্রাল ২৬ অগস্ট বিকেল পাঁচটায় নন্দন-৩-এ, দেখানো হবে তাঁর আন্তর্জাতিক সম্মানে স্বীকৃত ‘মাটির ময়না’। ছবিটি কলকাতায় প্রথম দেখানো হয় গোর্কিসদনে, আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব-এর উদ্যোগে, ওখানেই তারা তাঁকে স্মরণ করছে ২৪ অগস্ট সন্ধে ছ’টায়, দেখানো হবে ‘মুক্তির গান’। দু’টি অনুষ্ঠানেই বলবেন চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট জনেরা।
|
ছবির ডানায় |
|
মধ্য এশিয়ার সন্ধানে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ‘কোয়েস্ট অন উইংস’। কখনও তাসখন্দের সুপ্রাচীন রুটির বাজার ধরা পড়েছে তাঁদের ক্যামেরায়, কখনও তিমুরের স্মৃতি। দলের অন্যরা কল্লোল দাস, পূর্ণেন্দুশেখর মিত্র, শেখর বসুমল্লিক, আশিসকুমার কুণ্ডু এবং দীপঙ্কর সেনগুপ্ত। এঁদের ছবি নিয়েই আইসিসিআর-এর বেঙ্গল আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনী ‘আ ডেট উইথ সেন্ট্রাল এশিয়া’, ২৬ অগস্ট পর্যন্ত।
|
|
ঐতিহ্য |
দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে কলকাতার নানা ঐতিহ্য, অনেকটাই আমাদের সচেতনতার অভাবে। এ কথা ভেবে সেই ১৯৮০-তেই নিশীথরঞ্জন রায়ের উদ্যোগে বিশিষ্ট কলকাতাপ্রেমীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল ‘সোসাইটি ফর প্রিজারভেশন, ক্যালকাটা’। তিন দশক ধরে প্রদর্শনী, বই প্রকাশ, আলোচনাসভা ও বক্তৃতামালার মাধ্যমে আরব্ধ কাজে এই সংস্থা কিছুটা হলেও সফল সন্দেহ নেই। এ বার নিশীথরঞ্জন রায়ের জন্মশতবর্ষে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে ২৩ অগস্ট বেলা তিনটেয় টাউন হলে ‘কলকাতার ঐতিহ্য: অতীত ও বর্তমান’ বিষয়ে আলোচনা, সঙ্গে শতবার্ষিকী স্মারক ভাষণে ‘হাইকোর্টে তিন প্রজন্ম’ শীর্ষকে বলবেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। অন্য দিকে ২৪ অগস্ট সাড়ে ছটায় আইলিড ক্যাম্পাস, মহেশ্বরতলা রোড, ট্যাংরায় শহর নিয়ে আড্ডায় দেখা যাবে ক্যালকাটাওয়াক্স-এর ইফতিকার আহসান, বাঙালির পারিবারিক আলোকচিত্রের গবেষক হার্দিকব্রত বিশ্বাস এবং বাংলা ব্যান্ড শহর-এর অনিন্দ্য বসুকে। সঞ্চালনায় নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য।
|
সম্মান |
সতেরো বছর বয়সে অসমের করিমগঞ্জ থেকে চিরকালের জন্য ঘর ছেড়েছিলেন চিররঞ্জন দত্তচৌধুরী। ১৯৪৪-এ এ শহরে এলেন গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে আঁকা শিখতে। তার পরে জয়নুল আবেদিনের শিষ্যত্ব গ্রহণ। কিন্তু ছবি আঁকার চেয়ে তাঁর অনেক বড় পরিচয় মঞ্চের নেপথ্য শিল্পী হিসেবে। ১৯৪৯-এ প্রথম মঞ্চ-স্থাপত্য করলেন ‘রক্তকরবী’র জন্য, মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির প্রযোজনায়, দেবব্রত বিশ্বাসের নির্দেশনায়। ’৫৪-র মে-তে, আবার ‘রক্তকরবী’ বহুরূপীর জন্য। তার পরে শতাধিক নাটকের মঞ্চস্থপতি তিনি। সঙ্গে সঙ্গে চলেছে পোশাক-ভাবনা, প্রচ্ছদ ও গ্রন্থচিত্রণ। বহুমুখী এই শিল্পীকে সম্মান জানিয়েই শুরু হচ্ছে এ বছরের পূর্ব পশ্চিম নাট্য উৎসব। প্রদীপ দত্তর সংগ্রহ থেকে ‘খালেদ চৌধুরী: প্রণাম ও পরিক্রমা’ নামে একটি প্রদর্শনীর সূচনা করবেন শঙ্খ ঘোষ, আজ বিকেল পাঁচটায় গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়। প্রদর্শনী চলবে ২৫ তারিখ পর্যন্ত। তার পরে সাত দিন ধরে অ্যাকাডেমি, রবীন্দ্রসদন, মধুসূদন মঞ্চ, মিনার্ভা, গিরিশ মঞ্চে দেশি-বিদেশি নাটক ও উপস্থাপনা সব কিছুই রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে। থাকছে দেবব্রত বিশ্বাসের শতবর্ষে বিশেষ শ্রদ্ধা, ব্রাত্যজনের ‘রুদ্ধসঙ্গীত’ও। |
|
|
ভাষাবিদ্ |
বাংলা ভাষার উন্নয়নই তাঁর জীবনের ব্রত। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক-গবেষক মাহবুবুল হকের জন্ম ১৯৪৮-এর ৩ নভেম্বর, ফরিদপুরের মধুখালিতে। বর্তমান নিবাস চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ, ১৯৭০-এ। গবেষণা করেছেন অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে, বিষয় ছিল ‘তিন জন আধুনিক কবি: সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও সুকান্ত ভট্টাচার্য’। বর্তমানে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা ও সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন দেশে ও দেশের বাইরে, আমন্ত্রিত হয়েছেন বহু আলোচনায়। স্বদেশ ছাড়াও ভারত ও পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ওঁর পঁচিশটির বেশি বই। বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ও বাংলা অ্যাকাডেমি সহ যুক্ত নানা বিদ্বৎ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে বাংলা পাঠ্যবই প্রণয়নে গুণগত পরিবর্তন আনার কৃতিত্ব ওঁরই। পেয়েছেন মধুসূদন পদক, মুক্তিযুদ্ধ, চট্টগ্রাম আকাদেমি এবং অবসর সাহিত্য পুরস্কারের মতো নানা সম্মান। বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন প্রায় একুশটি পদে। তিনটি জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক তিনি। এর মধ্যে প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ প্রকল্পে একত্র হচ্ছে দুই বাংলার প্রায় পঞ্চাশ জনের লেখা। খুব শীঘ্রই রফিকুল ইসলাম ও পবিত্র সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হবে প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ। আপাতত সেই কাজে ব্যস্ত। এরই মাঝে ঘুরে গেলেন এ শহরে। উপলক্ষ ছিল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর আলোচনাচক্র। |
|
|
|
|
|
|
|