|
|
|
|
জমা হয়নি ১০০ কোটির ইউসি |
অরিন্দম সাহা • কোচবিহার |
বিভিন্ন স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা খরচের হিসাবের শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) জমা না পড়ায় টাস্ক ফোর্স গড়ল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। সর্বশিক্ষা মিশনের মাধ্যমে প্রতি বছর বিভিন্ন স্কুলের ‘সিভিল’ এবং ‘নন সিভিল’ সংক্রান্ত উন্নয়ন খাতে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়। সিভিল খাতের তালিকায় নতুন ক্লাস রুম তৈরি, সংস্কার প্রকল্প রয়েছে। নন সিভিল খাতে বরাদ্দ মেলে শিক্ষণ সামগ্রী কেনা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম, স্কুল গ্রান্টের মত নানা কাজের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রায় ৯ বছর ধরে ওই দুই খাতে বরাদ্দ হওয়া টাকার অন্তত ১০০ কোটি টাকার হিসাব সংক্রান্ত ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট (ইউসি) জমা পড়েনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে সর্বশিক্ষার আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলির কর্তাদের বারবার বলেও ওই বিপুল খরচের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন সর্বশিক্ষা মিশন এবং জেলা প্রশাসনের কর্তারা এবার ওই সার্টিফিকেট আদায়ে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিকের দফতরের ১২ জন অফিসারকে নিয়ে টাস্ক ফোর্সটি গড়া হয়েছে। জেলার ১২টি ব্লকের জন্য একজন করে অফিসারকে বকেয়া ইউসি আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চলতি অগস্ট মাস থেকেই ফোর্সের অফিসারেরা কাজে নামছেন। কোচবিহারের জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “বেশ কয়েক বছরের বরাদ্দ বড় অঙ্কের টাকা খরচের ইউসি পাওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যে বরাদ্দ খরচ করে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়া এবং নানা সমস্যায় প্রকল্পের কাজ হয়নি, এমন বরাদ্দও রয়েছে। সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত খরচের ইউসি আদায়ের জন্য টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে।” জেলার ১৮২০টি প্রাথমিক স্কুল, ২৬৮টি হাইস্কুল ছাড়াও নতুন তৈরি ২১১টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এরমধ্যে ৫০০ বেশি স্কুল কর্তৃপক্ষ সময়মত টাকা খরচের হিসাবের শংসাপত্র দাখিল করেননি। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের পুরানো বরাদ্দের ইউসি’ও দেয়নি বহু স্কুল। ২০০২ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত এই অঙ্কটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্ততপক্ষে ১০০ কোটি টাকা। সর্বশিক্ষা মিশনের কোচবিহারের প্রকল্প আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “২০০২ সাল থেকে ওই ইউসি বকেয়া হয়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে টাস্ক ফোর্সের অফিসারেরা সপ্তাহে দুই দিন করে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে গিয়ে সমস্যা মিটিয়ে ইউসি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।” সর্বশিক্ষা মিশনের কয়েকজন অফিসার জানান, নিয়ম অনুসারে স্কুল কর্তৃপক্ষকেই প্রকল্প বা নির্দিষ্ট কাজ শেষ হলেই বরাদ্দের খরচের হিসাব দেওয়ার কথা। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তা পাওয়া যায়নি। উল্টে ইউসি চাওয়ায় হলদিবাড়ির একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক আত্মহত্যার ভয়ও দেখান বলে অভিযোগ উঠে আসে। বিষয়টি প্রশাসনের তরফে খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। |
|
|
|
|
|