|
|
|
|
ব্রিটেন |
এমপি-রা সংঘর্ষ থামাননি, সমালোচনায় পুলিশকর্তারা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সংঘর্ষ প্রতিরোধে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করার পরেই রাজনীতিকদের পাল্টা কটাক্ষ করলেন পুলিশ কর্তারা।
গত কালই হাউস অফ কমন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কড়া হাতে সংঘর্ষ দমনের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। পুলিশের পদ্ধতিতেও অনেক গলদ ছিল। আর সে কারণেই সংঘর্ষ, লুঠপাট নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে আবার দাবি করেছেন, পুলিশের ছুটি বাতিল না করার সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন। তার পর অ্যাসোসিয়েশন অফ চিফ পুলিশ অফিসারস-এর প্রধান হিউ অরডের প্রতিক্রিয়া, “এমপি-রা নন, পুলিশই সংঘর্ষ থামিয়েছে। ছুটি বাতিল করে এমপি-রা দেশে ফিরলেও তার সঙ্গে সংঘর্ষ থামানোর কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশই কড়া হাতে সংঘর্ষ দমন করেছে। কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে এটা হয়নি।” সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় ছুটি কাটছাঁট করে দেশে ফিরেছিলেন টেরেসা এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনও। তবে তাঁর বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক হবে বুঝে অবশ্য হিউ জুড়ে দেন, টেরেসা মে-র কাছ থেকে ‘অভাবনীয়’ সাহায্য পাওয়া গিয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার টিম গডউইনও বলেন, যে পদ্ধতিতে সংঘর্ষ দমন করা হয়েছিল এবং যত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল, সেটা পুরোটাই পুলিশ-কর্তাদের সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রেও কটাক্ষ সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই। পুলিশের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে আগেই চাপে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাঁচ দিনেরও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ ও লুঠপাটের পর সেই চাপ আরও বেড়েছে। তার উপরে খোদ পুলিশ কর্তাদের এই কটাক্ষ।
তবে ব্রিটেন আপাতত শান্ত হলেও, সংঘর্ষ ফের মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কা অনেকেই করছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের ‘কড়া শাস্তি’ দেওয়ার কথা বললেও অনেক কিশোর-কিশোরীকে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে বাড়ি চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, বিনা শাস্তিতে। এর ফলে ভবিষ্যতে লুঠপাট ও ভাঙচুর ফের শুরু হতে পারে বলে পুলিশের একাংশও মনে করছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত রিচার্ড ম্যানিংটন বাওয়েস (৬৮) নামে এক ব্যক্তির শুক্রবার মৃত্যু হয়েছে। রিচার্ডকে নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫। লুঠপাট রুখতে গিয়ে রিচার্ড মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। তার পর থেকেই কোমায় ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় পুলিশ ২২ বছরের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। বার্মিংহামে তিন এশীয় যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ১৬ ও ১৭ বছরের দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। এই সংঘর্ষ ছড়ানোয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটার, ফেসবুক বা ব্ল্যাকবেরির বিশেষ মেসেজ-ব্যবস্থা ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করেছিল বিক্ষোভকারীরা। ভবিষ্যতে তা রুখতে এই সাইটগুলোর কতার্ব্যক্তি এবং ব্ল্যাকবেরি নির্মাতা ‘রিম’ কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছে ক্যামেরন সরকার। |
এশীয়রা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক ব্রিটেনে
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
লন্ডন দাঙ্গায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছেন অনেক এশীয়। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ভারতীয় উপমহাদেশের বংশোদ্ভূত। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এঁরাই এখন অনেকে হয়ে উঠেছেন ব্রিটেনবাসীর অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁদের সহনশীলতা এবং দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে ব্রিটেনে। তা ছাড়া, দাঙ্গার ঘটনায় পুলিশ অনেককে গ্রেফতার করলেও ভারতীয় উপমহাদেশের বংশোদ্ভূত কেউ নেই ওই তালিকায়।
তাঁর নাম তারিক জহান। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই মানুষটিই এখন নায়কের মর্যাদা পাচ্ছেন ব্রিটেনের মানুষের কাছে। কী কারণ? এলাকায় পাহারা দিতে গিয়ে বার্মিংহামে গত বুধবার সকালে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর ২১ বছর বয়সী ছেলের। কিন্তু এই ঘটনার পরেও তিনি যে ভাবে শান্ত থেকেছেন এবং বাকিদের শান্ত রেখেছেন তাতে জনতার কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন ‘ব্রিটেনের আসল মুখ’।
লন্ডনে অনেক গুজরাতি ব্যবসায়ী আছেন যাদের সর্বস্ব লুঠ হয়ে গিয়েছে এই দাঙ্গায়। এ ছাড়া পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার অনেকে আছেন যারা সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন। তছনছ হয়ে গিয়েছে তাঁদের সব দোকান। কিন্তু সব খোয়ানো এঁরাই ফের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন এবং অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন সেই স্বপ্নের বীজ। |
|
|
|
|
|