ইসিএল আবাসনে দখলদার, রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট
নিকর্মী আবাসন অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জনস্বার্থ মামলায় ইসিএলকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। শুক্রবার রাজ্য সরকারের আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবৈধ কয়লা খনন বন্ধ করার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আইনজীবী পার্থ ঘোষ ইসিএলের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, ইসিএল বিআইএফআর-এর অধীন। এই অবস্থায় ৭০ শতাংশ কর্মী আবাসনই বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে। অন্য দিকে, ইসিএল আবাসন দিতে না-পেরে প্রতি মাসে কর্মীদের কোটি-কোটি টাকার আবাসন ভাতা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বহিরাগতদের দখলে চলে যাওয়া কর্মী আবাসনগুলিতে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রক্ষণাবেক্ষণে কোটি-কোটি টাকা খরচ করছে।
পার্থবাবুর দাবি, অবিলম্বে বহিরাগতদের ইসিএলের আবাসন থেকে উচ্ছেদ করে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করতে হবে। ইসিএলের তরফে হাইকোর্টকে জানানো হয়, রাজনৈতিক মদতে পুষ্ট মাফিয়াদের দখলে থাকা কর্মী আবাসন তারা দখলমুক্ত করতে পারছে না। রাজ্য পুলিশের তরফেও সাহায্য করা হচ্ছে না বলে জানানো হয়। গত ৮ জুলাই ইসিএলকে সাহায্য করার জন্য রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। শুক্রবার ইসিএলের আইনজীবী মলয় বসু জানান, আবাসন দখলমুক্ত করতে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূমের পুলিশ সুপারেরা কোনও রকম সাহায্য করছেন না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
রাজ্য সরকারের আইনজীবী তথা সংসদের কয়লা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কল্যাণবাবু বলেন, “আসানসোল খনি ও শিল্পাঞ্চলে একটি কমিশনারেট গঠিত হয়েছে। এক জন ডিআইজি-কে নিয়োগ করা হয়েছে।” রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কয়লা পাচার বন্ধ করেছে দাবি করে তিনি বলেন, “ইসিএলের অধিকর্তাদের সাহায্য চাই। তাঁরা যেন কোনও ভাবেই কয়লা চুরি অনুমোদন না করেন।” তিনি আরও বলেন, “অবৈধ কয়লা খনন বন্ধ করতে সংসদের কয়লা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সঙ্গে কোল ইন্ডিয়া একটি কর্মসূচি তৈরি করে। অবৈধ কয়লা কারবার রুখতে তৎপর হয়েছিলেন সিআইএসএফ-এর ডিআইজি। তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার প্রস্তুত, শুধু ইসিএলের সদিচ্ছা চাই।”
হাইকোর্টের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং কয়লা মন্ত্রকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার নির্দেশ দেন চিফ জাস্টিস জয়নারায়ণ পাটিল এবং ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি অসীমকুমার রায়। দুর্নীতিগ্রস্ত সিআইএসএফের কর্তা ও অন্যান্য অধিকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে ইসিএলকে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সাহায্য চেয়ে আলোচনা করতে বলা হয়। যদি ডিজি-র তরফেও সাহায্য না পাওয়া গেলে হাইকোর্ট পাশে রয়েছে।
গত ৫ অগস্ট কয়লা মন্ত্রকের সচিবের আবেদনে পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন ও কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে হওয়া বৈঠকের প্রসঙ্গও এ দিন আদালতে ওঠে। ওই বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনগুলি উচ্ছেদের বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছিল। এর জবাবে কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান শ্রমিক সংগঠনগুলিকে পৃথক পর্যায়ে লিখিত মতামত জানাতে বলেন। তবে এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আদালত এমন কোনও দাবি মানবে না। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ইসিএলের চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “হাইকোর্ট যা বলবে, আমরা তাই করব। এর আগেও হাইকোর্টের কথা অনুসারে কাজ করার চেষ্টা করেছি। তবে পুলিশের সহায়তা না পাওয়ায় কাজ করা সম্ভব হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.