মেয়রকে পর্ষদের চিঠি
সাফাই হয় না হাসপাতাল, দূষণ প্রতিরোধে হচ্ছে বোর্ড
হাসপাতালের লাগাম ছাড়া বর্জ্য দূষণ ও মর্গের দূষণের জেরে সংক্রমিত হতে পারে গোটা শহর। এমনই আশঙ্কা করছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন পর্ষদের আসানসোলের আধিকারিক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে পর্ষদ। বুধবার দূষণ প্রতিরোধে একটি বোর্ডও গঠন করেছেন আসানসোল মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আসানসোলের জনবহুল অঞ্চলে অবস্থিত মহকুমা হাসপাতাল। প্রতি দিন কয়েক হাজার মানুষ এখানে আসেন। প্রায় ৩০০ জন রোগী সবসময় ভর্তি থাকেন। কিন্তু হাসপাতালের বর্জ্য নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে অভিযোগ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল ডিভিশনের আধিকারিক অঞ্জন ফৌজদার জানান, একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর দফতরের একটি দল তাঁর নেতৃত্বে মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শন করে। অঞ্জনবাবু বলেন, “আমি দেখেছি হাসপাতাল কার্যত বর্জ্য ও আবর্জনায় ঢেকে গিয়েছে। মর্গটির অবস্থা আরও খারাপ। এই অবস্থায় বেশি দিন চলতে থাকলে গোটা আসানসোল শহর সংক্রমিত হতে পারে।” তিনি আরও জানান, গোটা বিষয়টি উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে ডাকা হবে। আসানসোলের মেয়রকেও চিঠি লিখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে পর্ষদ।
হাসপাতালের ভিতরেই। ছবিটি তুলেছেন শৈলেন সরকার।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশে দূষণ প্রতিরোধের জন্য তড়িঘড়ি একটি বোর্ড গঠন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছাড়ানোর যে অভিযোগ উঠেছে, তা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শ্যামল সান্যাল। তিনি বলেন, “আমি এক মাস হল দায়িত্ব নিয়েছি। বর্জ্য ও মর্গ দূষণ প্রতিরোধের জন্য যা করা উচিত ছিল তা করা হয়নি। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” শ্যামলবাবু জানিয়েছেন, নিয়মিত দূষণ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে একটি পাঁচ জনের বোর্ড তৈরি হয়েছে। বোর্ডের সদস্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেবেন। সাফাইয়ের কাজও দেখাশোনা করবেন। মর্গটির আধুনিকীকরণের জন্য পূর্ত দফতরকে লিখেছেন বলেও জানিয়েছেন শ্যামলবাবু।
মহকুমা হাসপাতালে গেলেই দেখা যায়, ভিতরে ও বাইরে প্রচুর রক্তমাখা তুলো, ব্যান্ডেজ, গজ ও অন্যান্য ব্যবহার্য সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। দুর্গন্ধে জেরবার হচ্ছেন রোগী ও এলাকার বাসিন্দারা। আরও খারাপ অবস্থা হাসপাতাল মর্গটির। এটির আশেপাশে রয়েছে জনবসতি। মর্গের বারান্দায় কাটাছেড়া দেহ ফেলা থাকে। উপরে ছাদ না থাকায় কাক, চিল সেই দেহগুলি ঠুকরে খায়। দুর্গন্ধে অতিষ্ট হন এলাকার বাসিন্দারা। এমনকী এই মর্গের রাস্তার পাশের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময়ও এলাকার বাসিন্দারা নাকে চাপা দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা মল্লিক বলেন, “এখান দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে গা গুলিয়ে ওঠে।” অপর এক বাসিন্দা প্রকাশ চট্টরাজ বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনেকবার ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কিছুই করছেন না।”
হাসপাতালের এই দূষণ সমস্যার অভিযোগ তিনিও বহু বার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দোপাধ্যায়। তাপসবাবু বলেন, “হাসপাতাল সুপারকে বলেছি পুরসভার কী সাহায্য দরকার তা জানাতে। আমরা সাহায্য করব।” শ্যামলবাবু জানান, মর্গের দেহগুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। বর্তমানে ১৭টি দেহ রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বেওয়ারিশ দেহ ১০ দিন সংরক্ষণ করে তারপর সৎকার করে দিতে হয়। এ বার থেকে বেওয়ারিশ দেহের নিয়মিত সৎকার ও মর্গ পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের বর্জ্য রোজ পরিষ্কার করানোর জন্য মেয়রকে অনুরোধ করা হয়েছে।
First Page Jibjagat Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.