|
|
|
|
|
|
|
তথ্যচিত্র, স্মারকগ্রন্থ |
হাইকোর্ট ১৫০ |
সিপাহি বিদ্রোহ দমনের পরেই ১৮৫৮-র ১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের রানি ভারতকে সরাসরি নিজের কর্তৃত্বে আনেন। ১৮৬১-র ৬ অগস্ট প্রণীত হয় ‘ইন্ডিয়ান হাইকোর্টস অ্যাক্ট’, ফলে অবলুপ্তি ঘটে কলকাতার সুপ্রিম কোর্ট, সদর দেওয়ানি ও সদর নিজামত আদালতের। ১৮৬২-র ২ জুলাই রাজভবনের কাউন্সিল চেম্বারে স্যর বার্নেস পিকক-এর নেতৃত্বে ১৪ জন বিচারপতি শপথ নেন। শম্ভুনাথ পণ্ডিত প্রথম এবং একমাত্র ভারতীয় বিচারপতি নিযুক্ত হন নবগঠিত কলকাতা হাইকোর্টে। বেলজিয়ামের ইপ্রেস শহরের ‘ক্লথ হল’-এর অনুকরণে গথিক শৈলীর বাড়িটি সম্পূর্ণ হতে প্রায় দশ বছর সময় লেগেছিল। সরকারি স্থপতি ওয়াল্টার গ্রানভিল বাড়িটির নকশা তৈরি করেছিলেন। সূচনাপর্বে দ্বারকানাথ মিত্র, রমেশচন্দ্র মিত্র, চন্দ্রমাধব ঘোষ, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও ফণীভূষণ চক্রবর্তী বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। হাইকোর্টের প্রথম চার ভারতীয় ব্যারিস্টার ছিলেন জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর, মনোমোহন ঘোষ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। |
|
বহু ঐতিহাসিক মামলার নথি, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নরেন্দ্রনাথ দত্তের (স্বামীজি) শরিকি মামলার কাগজপত্র, বিদ্যাসাগরের উইল, ক্ষুদিরামের ফাঁসির কাগজ, রানি রাসমণির সম্পত্তির বিবাদের নথি কলকাতা হাইকোর্টের পরম সম্পদ। বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি, রাজ্যসভা-সদস্য সুখেন্দুশেখর রায় চান, এই সমস্ত ঐতিহাসিক কাগজপত্র যেন যথাযথ রক্ষিত হয়। সম্প্রতি হাইকোর্টের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে প্রদর্শিত হল সুখেন্দুশেখর রায়ের উদ্যোগে নির্মিত রঙিন তথ্যচিত্র ‘জাস্টিস থ্রু এজেস’। বহু লেখা ও দুষ্প্রাপ্য ছবি সংবলিত ১৫০ ইয়ার্স অব ক্যালকাটা হাইকোর্ট /কোমেমোরেটিভ ভলিউম প্রকাশিত হয়েছে। মূল ভবনের পাশাপাশি শতবার্ষিকী ভবন গড়ে উঠেছিল বহু কাল আগেই। এখন তৈরি হল সার্ধশতবার্ষিকী ভবন। সঙ্গে হাইকোর্টের নির্মাণপর্বের ছবি, স্মারকগ্রন্থ থেকে।
|
স্মৃতিচিত্র |
ছবি তুলতেন তিনি, ক্যামেরায়। ছবি আঁকতেনও, কলমে। স্মৃতির ছবি। আর সাদাকালো সেই ছবিতে বাঙালির এক সুবর্ণযুগের বর্ণিল ইতিকথা। তিনি পরিমল গোস্বামী (১৮৯৭-১৯৭৬)। বিহারীলাল গোস্বামীর পুত্র। জীবিকায় ছিলেন সম্পাদক ও বেতারজগতের মানুষ। সেই সূত্রেই রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে সে কালের প্রায় সব উজ্জ্বল সাহিত্যিকের সঙ্গ করেছেন। একের পর এক লিখে গিয়েছেন সেই স্মৃতিকথা, ছটি সাড়া জাগানো বইয়েস্মৃতিচিত্রণ, দ্বিতীয় স্মৃতি, আমি যাঁদের দেখেছি, পত্রস্মৃতি, যখন সম্পাদক ছিলাম আর পুনর্যাত্রা স্মৃতিপথে। তার প্রায় সবকটিই এখন অপ্রাপ্য। প্রকাশিত হয়েছিল রূপা ও প্রতিক্ষণ থেকে। এ বার সেই সব স্মৃতিকথা দু’মলাটে নিয়ে এল আনন্দ পাবলিশার্স। প্রকাশিত হল পরিমল গোস্বামীর সমগ্র স্মৃতিচিত্র। ভূমিকা লিখেছেন সুধীর চক্রবর্তী। এ বইয়ে আছে পরিমল গোস্বামী ও তাঁর পুত্র হিমানীশ গোস্বামীর তোলা বহু ছবিও।
|
জন্মদিনের কবি |
“টেবিলে রোদের পড়া...ওরা আজ আমাকে পড়ুক” লিখেছিলেন নব্বইয়ের বিশিষ্ট কবি তাপসকুমার লায়েক। ৪ জুলাই কোনও এক গভীর বিপন্নতায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন মৃত্যুর। ১৪ জুলাই ছিল তাঁর জন্মদিন, শোক ভুলে বন্ধুরা জড়ো হলেন কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে। উদ্যাপিত হল অভিনব জন্মদিন। কফি হাউসের সেই আড্ডার চেনা টেবিলে বসলেন তারেক কাজী, অয়ন চক্রবর্তী, প্রসূন ভৌমিক, সাম্যব্রত জোয়ারদার, মিতুল দত্ত ও অন্যরা। একটি চেয়ারে রাখা তাপসের ছবি, কাব্যপঙক্তি, প্রিয় ঝোলাব্যাগ। সামনে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে কালো কফি, সিগারেট। ‘টেবিলে রোদের পড়া’ হিসেবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাপসের কয়েকটি কবিতাবই বৃষ্টি ও তামাকের ঘর, তুমি নেই মহাদেশ, সারেঙ ও ব্যালেরিনা জল, নাও। দু’ঘণ্টার আশ্চর্য আড্ডায় আত্মহত্যার নীল অবসাদ মুছে, বন্ধুদের আবেগে, জেগে উঠলেন নিশ্চিত জন্মদিনের কবি।
|
স্বজন |
থিয়েটার শুধু কুশীলব নয়, বহু মানুষের সংযুক্ত প্রচেষ্টা। থাকেন নাট্যকার, নির্দেশক, মঞ্চ-নির্মাতা, আলো-আবহ- মেক-আপ ইত্যাদি শিল্পীরা। এই সব গুণী মানুষ যখন শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন তখন তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এ বার তৈরি হল ‘ভবানীপুর স্বজন’। ২৮-৩১ জুলাই মধুসূদন মঞ্চে চারটি নাট্য দলের নাটক মঞ্চস্থ করে তারা সম্মান জানাবে খালেদ চৌধুরিকে। নাট্য জগতের এই বিরল প্রতিভাধর মানুষটি একসঙ্গে এতগুলি দলে কাজ করেছেন এবং এত মানুষের সঙ্গে মানবিক ও শৈল্পিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন যে আজ তিনি নিজেই এক জন দৃষ্টান্ত। তাঁকে সম্মান জানিয়ে ‘ভবানীপুর স্বজন’ এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চায়, ‘আমরা শুধুই নিবিড় সম্পর্কের দিশারী’।
|
পরিষদ ১১৮ |
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ ভাবলেই ধুলো আর ঝুলে ভরা, ছেঁড়াখোঁড়া বই ঠাসা একটা গ্রন্থাগারের যে ছবি অনেকেরই মনে হত, গত প্রায় এক দশকে তার অনেকটাই বদলেছে। পরিষৎ ভবন ফিরে পেয়েছে তার সুসংস্কৃত আদি রূপ, বহু বই-পত্রিকা ল্যামিনেশন করা হয়েছে ও হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাইজেশনও হয়েছে প্রচুর। পরিষদের সংগ্রহশালা, পুথিশালা, সাহিত্যিক স্মারক কক্ষ আজ শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য। পরিষৎ-প্রকাশনা পেয়েছে অন্য মাত্রা। তবু আছে নানা সমস্যা, লোকাভাব ও স্থানাভাবই প্রধান। এর মধ্যেই পরিষদ পূর্ণ করল ১১৮ বছর। আট হাজার পুথি ও আড়াই লক্ষের বেশি গ্রন্থ-পত্রিকায় সমৃদ্ধ এই গ্রন্থাগারের ১১৯তম প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে আজ বিকেল সাড়ে চারটে থেকে পরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাদিবসের ভাষণ দেবেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। এই উপলক্ষে বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম সেনগুপ্ত, মৃণালকান্তি চন্দ ও অরিন্দম বসুকে বিশেষ সম্মান জানানো হবে।
|
নতুন বইমেলা |
একটি মণ্ডপে শুধুই রবীন্দ্রনাথের বই, প্রদর্শনের জন্য। আর পঞ্চাশটির মতো বিপণি। তোরণ তৈরি হয়েছে শিল্পী শুভাপ্রসন্নের পরিকল্পনায়। রাজ্য সরকার ও কনসর্টিয়াম ফর বুকস অ্যান্ড কালচারের যৌথ উদ্যোগে বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষে শহরে এক নতুন বইমেলা নন্দন চত্বরে। কনসর্টিয়ামের পক্ষে কল্যাণ শাহ জানালেন, এই মেলায় প্রকাশক ছাড়া কাউকে বিপণি করতে দেওয়া হচ্ছে না, কোনও ছাড় দিতেও কোনও প্রকাশককে বাধ্য করা হবে না। ২৯ জুলাই থেকে ৯ অগস্ট চলবে মেলা। সঙ্গে মঞ্চে নাচ-গান-কবিতায় রবীন্দ্রস্মরণ, সরকারি উদ্যোগে।
|
ভারতসভা |
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার বয়স কমিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসাবে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শিবনাথ শাস্ত্রী, নীলকমল মিত্র প্রমুখের সহায়তায় ১৮৭৬-এর ২৬ জুলাই ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ বা ‘ভারতসভা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম সভাপতি মনোমোহন ঘোষ ও প্রথম সম্পাদক আনন্দমোহন বসু। স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও পরে এর সদস্যরা প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়ে মন দেন। ১৩৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় ৬২, বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ‘ভারতসভা ভবন’-এ ‘ভারতবোধ ও স্বদেশচিন্তা’ বিষয়ক আলোচনাসভায় বলবেন রাজ্যের কারিগরি-শিক্ষা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী ত্যাগরূপানন্দ।
|
আত্মহত্যা |
|
‘শুধু তোমায় হারাব আমি স্বপ্নেও ভাবিনি’, স্টুডিয়োয় গিটার বাজিয়ে গাইছিলেন অঞ্জন দত্ত, স্বপ্নসন্ধানী-র নতুন নাটক সেই সৌমিলি-র জন্যে। নির্দেশক কৌশিক সেন মনে করেন, ‘আমি বৃষ্টি দেখেছি’ গানটার এই লাইনটি এ-নাটকের জন্যে মোক্ষম। ইন্দ্রাশীষ লাহিড়ীর লেখা নাটকটির শুরুতেই একটি মেয়ের আত্মহত্যা ঘিরে শ্মশানে তার স্বামী আর প্রেমিকের দ্বন্দ্ব। ‘ওই দু’টি পুরুষের মেয়েটিকে হারানোর পাশাপাশি মেয়েটির আত্মহত্যা আমার কাছে অনেকটা বামপন্থীদের রাজনৈতিক আত্মহত্যার মতোই, কত মানুষের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল তাঁদের পার্টির ভুলে।’ বললেন কৌশিক, ব্যাকড্রপে তাই এ-নাটকে ১২ মে রাত থেকে ১৩ মে দুপুর গড়িয়ে যায়। রজতাভ দত্ত নিজের মঞ্চে প্রত্যাবর্তনে উত্তেজিত: ‘ন’বছর পর নতুন নাটক করছি, শরীরের জন্যে পারিনি এতদিন।’ আর দেবদূত ঘোষ: ‘চরিত্রটা চ্যালেঞ্জিং। হিপোক্রিট নয়, প্যাশন আছে, কবি। নিঃশর্ত প্রেমে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটির সঙ্গে।’ প্রথম অভিনয় ৩১ জুলাই রবিবার সন্ধে ৭টায় অ্যাকাডেমি-তে।
|
‘আমাদের বাড়ি’ |
স্বদেশে-বিদেশে স্বনামধন্য মানুষরা বসেছিলেন দর্শকের আসনে। আর মঞ্চে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের পরিচয় জানেন না কলকাতার মানুষ। এমনই ‘অন্য রকম’ অনুষ্ঠানে ‘অমর্ত্য সেন রিসার্চ সেন্টার’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হল বিধাননগরে। যাঁরা এই বারো বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠানের নতুন যাত্রার সূচনা করলেন, তাঁরা নানা জেলার প্রাথমিক স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি, শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক-শিক্ষিকা। যাঁরা ঘিরে দাঁড়িয়ে হাততালি দিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন অমর্ত্য সেন, কৃষ্ণা বসু, সুগত বসু, বড় বড় বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধি, অধ্যাপক, চিকিৎসক প্রমুখ। উন্নয়নের কেন্দ্রে থাকবেন তাঁরা, যাঁরা দরিদ্র, প্রান্তবাসীদের মধ্যে হাতে-কলমে কাজ করেন -- সেই বিশ্বাস থেকেই এমন ব্যবস্থা। বাইরের পাঁচজনের কাছে প্রতীচী ইনস্টিটিউট ‘অমর্ত্য সেনের প্রতিষ্ঠান’ বলে পরিচিত হলেও, বোলপুরের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় ভট্টাচার্য বললেন, ‘আমরা মনে করি প্রতীচী আমাদের বাড়ি, যেখানে এসে মনের কথা বলা যায়।’
|
হাজার কণ্ঠে |
গুলজার জানিয়েছেন: ‘আমার বলতে এতটুকু দ্বিধা নেই যে রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। আমি যখন স্কুলে পড়ি, তিনিই তখন আমার জীবনের গতিপথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন।’ বিশ্বকবির সার্ধশতজন্মবর্ষে তাঁর গান নিয়েই অরুন্ধতী দেবের পরিকল্পনা-সংকলন-বিন্যাস ও সামগ্রিক পরিচালনায় হাজার কণ্ঠে সম্মেলক রবীন্দ্রসংগীত, ‘সংগীত ভারতী মুক্তধারা’র নিবেদন: ‘যেদিন ফুটল কমল’। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ৩১ জুলাই বিকেল ৫.৩০। অংশ নিচ্ছে কলকাতা ও শান্তিনিকেতন-সহ পশ্চিমবঙ্গের ১৪টি জেলার ৪৭টি সংস্থা, সঙ্গে বাংলাদেশ-ও। যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনায় প্রত্যূষ বন্দ্যোপাধ্যায় আর আবৃত্তিতে শ্রীকান্ত আচার্য।
|
প্রয়াণ |
সাহিত্যের পরিমণ্ডলে বড় হলেও সংগীতের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ ছিল সদ্যপ্রয়াত মানুষটির। অতনু সান্যাল, বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ ও খ্যাতিমান শিক্ষক, জন্ম ১৯৫০-এর ৭ মার্চ। প্রবোধকুমার সান্যালের পুত্র হওয়ার সুবাদে ছেলেবেলায় লেখাপড়ার খানিকটা পাঠ নিয়েছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তবে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ছাত্রাবস্থায় চণ্ডিকানন্দ মহারাজের সংগীত চর্চাই প্রেরণা, পরে রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষা অরবিন্দ বিশ্বাসের কাছে। অতুলপ্রসাদ-রজনীকান্তের গানও গাইতেন অতনু, গাইতেন অন্যান্য গানও। একাধিক রেকর্ড-ক্যাসেট হয়েছে, দেশে-বিদেশে গান গেয়েছেন। অধীত বিদ্যার বিষয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, তা নিয়েই চার দশক ধরে সরকারি কলেজে শিক্ষকতা ও লেখালেখি, জার্মান ভাষাও প্রিয় ছিল তাঁর। ক্যালকাটা কালচারাল সেন্টারের আয়োজনে তাঁর গোলপার্কের বাড়িতে হল স্মরণানুষ্ঠান।
|
কালোবাজারে |
বাজারে রবীন্দ্রনাথ অনেক দেখেছে বাঙালি। কবির বাজারও এখন রমরমা। কিন্তু কালোবাজারে রবীন্দ্রনাথ! হ্যাঁ তাও ঘটে গেল এই সার্ধশতবর্ষে। সরকারি ‘পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকার মহা-রবীন্দ্রসংখ্যাটি সম্প্রতি এক সহনাগরিক বইপাড়ার গলি থেকে দেড় গুণ দামে কিনেছেন। দর শুরু হয়েছিল প্রায় চার গুণ থেকে। রবীন্দ্রনাথ জাল হয়েছে, চুরি হয়েছে, কিন্তু ব্ল্যাক! না এমন কখনও শোনা গিয়েছে বলে তো মনে হয় না। সত্যই বড় বিচিত্র এই সার্ধশতবর্ষ।
|
সিলেবাসে আছে |
|
রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষে সিডি অ্যালবাম প্রকাশের বিরাম নেই। প্রকাশিত হয়ে চলেছে নানা মানের নানা ধরনের রবীন্দ্রসঙ্গীত। তারই মধ্যে এক অভিনব আয়োজন অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দেড়শো বছরে দেড়শোটি গান এক অ্যালবামে। এবং সে গানের অনেকটাই, সিলেবাসে আছে। তিনটি সিডি-র এই অ্যালবাম ‘উপহার’-এ (সাগরিকা) ভালবাসার গান, সিলেবাস আর বিষয় বৈচিত্র্য। স্বল্পগীত কয়েকটি গানও গেয়েছেন অগ্নিভ। কিন্তু কেন এমন আয়োজন? “সংখ্যার মিলটা একটা ব্যাপার বটে, কিন্তু সেটাই সব নয়। এখানে আমি অল্পশ্রুত কয়েকটা গান গেয়েছি, যেমন ওগো স্বপ্নস্বরূপিণী। তা ছাড়া এর পরিকল্পনাটার মধ্যেও নতুনত্ব আছে। মূলত পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেছি। তা ছাড়া বিপরীত ভাবের গান পর পর গেয়েছি অ্যালবামের বিষয় বৈচিত্র্য অংশটাতে,” বলছেন অগ্নিভ। |
|
|
|
উৎসারিত আলো |
কলেজের সঙ্গে তার ছাত্র ও শিক্ষকটির সম্পর্কের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে পঞ্চাশেরও বেশি। আর সেই ছাত্র ও শিক্ষকের বয়স হল পঁচাত্তর। কলেজের নাম স্কটিশ চার্চ, শিক্ষকের নাম অলোক রায়। কলেজের এই উজ্জ্বল ছাত্র ও শিক্ষকটি দীর্ঘ কাল ধরে জড়িয়ে আছেন ঊনবিংশ শতক সংক্রান্ত গবেষণায়। তথ্যের ভিত্তিতে সরস গদ্যে লিখেছেন অনেকগুলি বই রাজেন্দ্রলাল মিত্র, আলেকজান্ডার ডাফ ও অনুগামী কয়েকজন, বাঙালি কবির কাব্যচিন্তা: উনিশ শতক, উনিশ শতক।
|
সম্পাদনা করেছেন ‘কাউন্টারপয়েন্ট’, ‘নাইন্টিন্থ সেঞ্চুরি স্টাডিজ’। কিন্তু ঊনবিংশ শতকই কেন তাঁর গবেষণার মুখ্য বিষয় হল? “দুটো কারণে। এক আমার পরিবার। আমার মাতামহ মন্মথনাথ ঘোষ উনিশ শতকের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের অনেকের জীবনী লেখেন। তাঁর ছিল বিপুল বইয়ের সংগ্রহ, যা ছোট থেকেই দেখে আসছি। তার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত আমাকে এই দিকে চালিত করলেন।” বলছেন অলোকবাবু। সেই ১৯৫৩-য় কলেজে আসা বাংলা বিভাগে স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থী হয়ে। প্রথমে ছাত্র, পরে অধ্যাপক। অবসর নিয়েছেন তেরো বছর আগে। কিন্তু কলেজের সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়েনি কোনও। গবেষণা আর লেখালেখির ফাঁকে মাঝে মাঝেই চলে যান স্মৃতির কলেজে। সম্প্রতি গুণী মানুষটিকে সংবর্ধনা দিল কলেজের শিক্ষক সংসদ ও বাংলা বিভাগ। স্মৃতিচারণ, গান-কবিতা তো ছিলই, ছিল অলোকবাবুর বক্তৃতাও, বিষয়, ‘জন্ম সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ’। প্রকাশিত হল একটি ছিমছাম, তথ্যপূর্ণ স্মারক পুস্তিকাও। আর তাঁর পঁচাত্তর বছর উপলক্ষে প্রকাশিত হতে চলেছে সংবর্ধনাগ্রন্থ উৎসারিত আলো (অক্ষর প্রকাশনী)। এখন সাম্প্রতিক উপন্যাস-ছোটগল্প নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত তিনি। |
|
|
|
|
|
|
|