|
|
|
|
শতবর্ষে দু’টি রথ পুরুলিয়া শহরে |
প্রশান্ত পাল • পুরুলিয়া |
রাত পোহালেই রথযাত্রা। কিন্তু পুরুলিয়া শহরের এ বারের রথযাত্রা একটু অন্যরকম। কেন না এ বার শতবর্ষে পা দিচ্ছে এই শহরের রথ। এ কথা জানিয়েছেন উৎসবের ট্রাস্টিবোর্ডের অন্যতম কর্মকর্তা শচীদুলাল দত্ত। এ বার পুরুলিয়া শহরের রাজপথে একটি নয়, চলবে দু’টি রথ। প্রতিবারের মতো মূল রথে থাকবে রাধা-গোবিন্দের বিগ্রহ। অন্যটিতে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি। শচীদুলালবাবু বলেন, “পঞ্চাকোট রাজবংশের কোনও এক রাজার সময়ে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের কিছু দিন আগে লখনউ থেকে মুন্নিবাঈ ওরফে মনি বাঈজি এখানে এসেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি কতিপয় ধর্মপ্রাণ মানুষের সংস্পর্শে এসে নিজের পেশা পরিত্যাগ করে বৈষ্ণবধর্মের দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং এখানেই তিনি থেকে যান। ধীরে ধীরে বৈষ্ণবীয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে তিনি মনমোহিনী বৈষ্ণবী নামে পরিচিতি লাভ করেন। এবং পুরুলিয়া শহরের চকবাজারে একটি মন্দির নির্মাণ করে রাধাগোবিন্দের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। সেই বিগ্রহই রথে অধিষ্ঠিত হয়।” |
|
চলছে প্রস্তুতি। ছবি: সুজিত মাহাতো। |
তিনি জানান, এখানকার রথে রাধাগৌবিন্দ জিউ অধিষ্ঠিত থাকেন। এটাই এখানকার রীতি। শচীদুলালবাবু বলেন, “একশো বছর আগে মনমোহিনী বৈষ্ণবী যে রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন, সেই রথটি নির্মাণ করেছিলেন বাঁকুড়ার শিল্পী আশুতোষ কর্মকার। এ বার আমরা যে নতুন রথ তৈরি করছি তা নির্মাণের জন্য বাঁকুড়া থেকে অরুণ কর্মকার নামে আর এক শিল্পীকে নিয়ে আসা হয়েছে।” এখন রথযাত্রা উৎসবের আঙ্গিকে আমূল পরিবর্তন এসেছে। শচীদুলালবাবু জানান, আগে দুপুর ২টোর সময়ে রথ টানা হত। সূর্যাস্তের আগেই শহরের পোস্টঅফিস থেকে নামোপাড়া পর্যন্ত রথ পৌঁছে যেত। এখন সন্ধ্যার পরে রথ টানা হয়। আগে রথে গ্যাসের আলো ব্যবহার করা হত। এখন বৈদ্যুতিক আলো দিয়ে রথ সাজানো হয়। এখন মানুষের পাশাপাশি রথ টানার ক্ষেত্রে যন্ত্রও ব্যবহার করা হয়। শোভাযাত্রায় ছৌ, ঘোড়ানাচ-সহ আদিবাসী নৃত্যের সঙ্গে থাকছে নাচনি নাচও। |
|
|
|
|
|