সিকি-বাজেট হলেও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের প্রথম অভিজ্ঞতা। দেখে দেখে বাংলা পড়তে গিয়ে বেশ কয়েক বার হোঁচট। বিরোধী বামফ্রন্টের শিবির থেকে কটাক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে আসরে শাসক শিবির! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন বর্ষীয়ান মন্ত্রীও বাম-বিরোধী আক্রমণে যোগ দিচ্ছেন দেখে উঠে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তুমুল হট্টগোল হঠাৎ থমকে গেল মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্যে! স্বভাবরসিক সুব্রতবাবু বললেন, “বাংলা নিয়ে এত কথা বলছেন! বলুন তো, আই ডোন্ট নো বাংলায় কী হবে?” সূর্যবাবু চুপ! শাসকপক্ষ আরও জোরালো। পরে সূর্যবাবুই সহাস্যে ব্যাখ্যা করলেন, “এটা বোধহয় দাদাঠাকুরের জোক! এত প্রচলিত যে, উৎস বলা মুশকিল। যাই হোক, সুব্রতবাবু প্রয়োগ করে দিলেন!” কী রকম? না, সূর্যবাবুকে ‘আই ডোন্ট নো’-র বাংলা বলতে হলে ‘আমি জানি না’ বলতে হত। ঘুরপথে তাতে নিজের ‘অক্ষমতা’ই নথিভুক্ত থাকত সভার কার্যবিবরণীতে! ছাব্বিশ থেকে বিধানসভায়। অভিজ্ঞতা থেকেই সূক্ষ্ম চালটা দিয়েছিলেন মন্ত্রী!
|
বিধানসভায় সব মন্ত্রীর ঘরই নিরাভরণ। সামান্য কিছু আসবাব, কাজের টেলিফোনটুকু। তার মধ্যেই সরকারপক্ষের মুখ্য সচেতকের পাশে নিজের ঘরটি গুছিয়ে নিয়েছেন সেচ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মুখ্য সচেতকের ঘরের সঙ্গে পার্টিশনে নতুন প্লাইউড লেগেছিল আগেই। এ বার মাদুর, বাঁশ ও কাঠের দৃষ্টিনন্দন মিশেলে তৈরি পোর্টেবল এক পার্টিশন নিজের ঘরে বসিয়েছেন মানসবাবু। তার আড়ালে পুরনো চেয়ার এবং কাঠের লম্বা টেবিল। ঘরে ঢুকলে ওই পার্টিশনে চোখ পড়বেই। ত্রিপুরা থেকে আনা নাকি? মানসবাবু বলছেন, “না। আমাদের রাজ্যেরই!” নিজের জেলার? সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়ছেন মন্ত্রী। বোঝা গেল। সবংয়ের মাদুর শিল্প! আর কী! |
শরীর ভাল নয়। গলার ব্যথা ভোগাচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ। ফোনে কথা বলতেও কষ্ট। দিল্লিতে গৃহবন্দি থেকেই হঠাৎ ভাল খবর পেয়েছেন সৈফুদ্দিন চৌধুরী। জার্মানির এক প্রকাশনা সংস্থা তাঁকে এবং তাঁর দলকে নিয়ে আস্ত বই বার করেছে সম্প্রতি! শিরোনামে অবশ্য ‘সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’ লেখা হয়েছে। সফির দলের নাম যদিও ‘পার্টি ফর ডেমোক্র্যাটিক সোস্যালিজম (পিডিএস)।’ তবু সফিরই বিভিন্ন লেখা, তাঁর সিপিএম-ত্যাগ, নতুন দল গড়া এ সব নিয়ে বিদেশে চর্চা হয়ে বইও বেরোচ্ছে জেনে পিডিএসের রাজ্য সভাপতি স্বভাবতই অভিভূত। যিনি বলছেন, “এমন কিছু হয়ে গিয়েছে, জানতামই না!” সফির পুত্র অভিজ্ঞান ইন্টারনেট থেকে পরিচিতদের ই-লিঙ্ক পাঠাচ্ছেন, যাতে উৎসাহীরা বইটি সম্বন্ধে খোঁজ-খবর নিতে এবং প্রয়োজনে কিনতে পারেন।
|
ইদানীং একটি ইতিবাচক রসিকতা চালু হয়েছে নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসুকে নিয়ে। যিনি ভোটে সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা গৌতম দেবকে হারিয়ে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী হয়েছেন। থিয়েটার-টিয়েটার যে খুব একটা নিয়মিত হচ্ছে, তা নয়। দফতরের কাজেই ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে প্রচুর। কখনও দিল্লি। কখনও মুম্বই। কখনও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। হাজার হোক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আস্থাভাজন’ তিনি। সে কথা থাক। রসিকতাটা শোনা যাক। যা, ঘটনাচক্রে, হাসতে হাসতে মন্ত্রীর নিজেরই বলা “আমায় এখন লোকে কী বলছে জানেন? ঠাকুর (শ্রীরামকৃষ্ণ) বলতেন, থ্যাটারে (থিয়েটার) লোকশিক্ষে (লোকশিক্ষা) হয়। এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চশিক্ষাও হয়!” |
দু’টি চশমা। একটি নিত্য ব্যবহারের। অন্যটি আপৎকালীন। দু’টিই সোনার। দু’টি বাঁধানো দাঁত। তা-ও সোনার। সাদা পাঞ্জাবির পকেটে পার্কার কলম। গোল্ড-ক্যাপ। ঝুল পকেটে লম্বা সিগারেটের প্যাকেট। সোনালি রংয়ের। পূর্ব মেদিনীপুরে একের পর এক নির্বাচনে সোনার সাফল্য। বয়স চুয়াত্তর প্লাস। কিন্তু একঝলক দেখে কে বলবে! দুলতে দুলতে কিং-সাইজে সুখটান। কেন্দ্রের মন্ত্রী থাকুন বা না-থাকুন, শিশির অধিকারী সত্যিই সোনায় মোড়া! |