|
|
|
|
|
|
|
হুসেনের তৈরি চলচ্চিত্র |
শিল্পীর চোখে |
সেবারও রুটিন-মাফিক পুণে-র ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে ফেরার সময় মুম্বই এসেছেন মৃণাল সেন, রাতের ফ্লাইটে ফিরবেন কলকাতা, দুপুরের দিকে ফিল্মস ডিভিশন-এ গিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। বন্ধুরা শুকদেব, প্রতাপ, চারি, যাঁরা সে-সময়ের বিশিষ্ট তথ্যচিত্রকার, তাঁরাই খবর দিলেন: এই মাত্র হাতে-গরম একটা ফিল্ম বেরল ল্যাবরেটরি থেকে, থ্রু দ্য আইজ অব দ্য পেন্টার, বানিয়েছেন মকবুল ফিদা হুসেন। শুনে কৌতূহলবশত বসে গেলেন মৃণাল সেন আঠারো মিনিটের ছবিটা দেখতে। এত মুগ্ধ হলেন যে কলকাতায় ফিরেই কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের দুই শিল্প-সমঝদার জাহাঙ্গির ভাবনাগরী আর অশোক মিত্র-কে চিঠি লিখলেন: ‘রাজস্থান যে এত সুন্দর তা নিজের চোখে দেখে ততটা বুঝিনি, যতটা বুঝলাম এ-ছবি দেখে।’ ইতিমধ্যে ’৬৭-তে মুক্তিও পেল হুসেনের এই প্রথম ছবিটি (সঙ্গে সাদাকালোয় তারই স্থিরচিত্র), তুলল বিতর্কের ঝড়। |
|
কিন্তু সে বারের বার্লিন উৎসবে সেরা তথ্যচিত্র হিসেবে স্বর্ণভল্লুক জিতল ছবিটি। ‘দিল্লিতে হুসেন-কে সংবর্ধনা দেওয়ার সময় ডাক পড়ল আমারও, গেলাম, সেখানেই প্রথম আলাপ, সে-আলাপ বন্ধুত্বে গড়াল। কলকাতায় এলেই আমার বাড়ি আসত, নিয়ে যেত বালিগঞ্জ ফাঁড়ির আজাদ হিন্দ ধাবা-য়, খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে জোরদার আড্ডা হত সিনেমা নিয়ে।’ স্মৃতিতে ফিরছিলেন মৃণাল সেন। তিনি, ঋতুপর্ণ ঘোষ, হিরণ মিত্র প্রমুখ বলবেন চিত্রকর হুসেন-এর চলচ্চিত্রকার হয়ে ওঠা নিয়ে। ১-২ জুলাই নন্দন-৩-এ। |
|
প্রথমটি ছাড়া দেখানো হবে হুসেনের পরের ছবি দু’টিও: মাধুরী-শাবানা-শাহরুখ-নাসিরুদ্দিন অভিনীত গজগামিনী (২০০০) এবং তব্বু-কুণাল কপূর-রঘুবীর যাদব অভিনীত মীনাক্ষী: আ টেল অব থ্রি সিটিজ (২০০৪)। দেখানো হবে তাঁকে নিয়ে তৈরি শান্তিপ্রসাদ চৌধুরীর দু’টি তথ্যচিত্র-ও: আ পেন্টার অব আওয়ার টাইম (১৯৭৬) ও হুসেন (১৯৮০)। যৌথ উদ্যোগে ফিল্মস ডিভিশন ও নন্দন। আর নন্দন-এর পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৩০ জুন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নন্দন-৩-এ দর্শকের মুখোমুখি হবেন অশোক বিশ্বনাথন, তাঁর কিছু সংলাপ কিছু প্রলাপ-ও দেখানো হবে ওদিন সন্ধ্যায়।
|
শোনার বই |
|
বই কি শুধু দেখার আর পড়ার? না, শোনারও। অন্তত ছোটদের বই যে পড়ার সঙ্গে শোনারও হতে পারে বাংলা বইয়ের ইতিহাসে তা প্রথম দেখাল আনন্দ পাবলিশার্স। বইয়ের নাম জব্বর খামারবাড়ি (২০০.০০)। দশ পাতার এই বইয়ে বিড়াল, কুকুর, শূকর, ঘোড়া আর গোরুকে নিয়ে জব্বর সব ছবি আর ছড়া। কিন্তু সে তো কতই হয়। নতুন যেটা সেটা হল, এ বইয়ে লাগানো আছে একটা বোতাম। সেটা টিপলেই অবিকল শোনা যাবে ম্যাও, ভৌ, ঘোঁতঘোঁত, চিঁহিহি আর হাম্বা যে পাতায় যা। রাশিয়ার ‘আজবুকভারিক’ গ্রুপের সঙ্গে যৌথ ব্যবস্থাপনায় তৈরি অভিনব বইটি। ছড়াগুলির বঙ্গানুবাদ করেছেন পৌলোমী সেনগুপ্ত, একদম বাঙালি গন্ধ তায়: ‘খোকা কুকুর খুকু কুকুর/খেলে মায়ের কোলে/নাদুসনুদুস মিষ্টি তারা/পেট ভরে খায় বলে...’। হরেক মজার বইটি দেখে এক সহ-পাঠক মন্তব্য করলেন, যাক, এত দিনে ‘পড়াশোনা’ কথাটা সার্থক হল!
|
|
বর্ষামঙ্গল |
বর্ষা এল। এলেন চিত্রলেখা চৌধুরীও। এলেন ‘বর্ষামঙ্গল’ নিয়ে। রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে মেগাফোন থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত সিডিটিতে বারোটি গান। সবই আষাঢ়ের। “গানগুলি শিখেছি শৈলজারঞ্জন মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ আর ইন্দিরা দেবীর কাছে। সঙ্গীত ভবনের আয়োজনে তখন যে বর্ষামঙ্গল হত শান্তিনিকেতনে তার পরিচালনা করতেন শৈলজাদা। আমি পাঠভবন স্কুলে পড়তাম। আমাকে প্রতি বছরই একটা করে একক গান গাইতে দিতেন,” বললেন চিত্রলেখা। তাঁর এই সাম্প্রতিক সিডি-র প্রচ্ছদে বাদল দিনের কদম ফুলের ছবি, তাঁর মা শিল্পী চিত্রনিভা চৌধুরীর আঁকা (সঙ্গের ছবি)।
|
চলচ্চিত্তচঞ্চরি |
হীরকজয়ন্তী বর্ষে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী সংসদের উৎসাহ এখন তুঙ্গে। অভিনীত হচ্ছে সুকুমার রায়ের ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরি’। ভবদুলাল-এর চরিত্রে নির্দেশক অরুণ মুখোপাধ্যায়: ‘সেই স্কুললাইফ থেকেই এ আমার অসম্ভব প্রিয় নাটক, ঘুরেফিরে করেছি কত বার।’ সঙ্গে শ্রীখণ্ড চরিত্রে তাঁর দীর্ঘ দিনের বন্ধু বিভাস চক্রবর্তী: ‘অরুণ চাইছেন বলেই চলচ্চিত্তচঞ্চরি-তে অভিনয় করছি’। প্রাক্তনী সংসদের সঙ্গে একাত্মতার কথাও জানালেন তিনি। দুই প্রাক্তনীর এমন যুগলবন্দি মঞ্চে বেশ কিছুকাল পর। এ ছাড়াও থাকছে ‘মেঘদূতম’ অবলম্বনে নৃত্যানুষ্ঠান। ২ জুলাই শিশির মঞ্চে সন্ধে ৬টায়। ১৯৫১-য় প্রাক্তনী সংসদ শুরু হয়েছিল অতুলচন্দ্র গুপ্তের সভাপতিত্বে, বর্তমান সভাপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র।
|
মল্লার |
এই বর্ষায় শিল্পশিবির, নাম ‘মল্লার’। আকাশের ক্যানভাসে যখন মেঘবৃষ্টির খেলা তখন এ শহরের তেরো জন শিল্পী ‘টেকনোইন্ডিয়া গ্রুপ’-এর আয়োজনে ছবি আঁকছেন ক্যানভাসে। প্রকাশ কর্মকার, বিজন চৌধুরী, যোগেন চৌধুরী, ধীরাজ চৌধুরী, ওয়াসিম কপূর, ছত্রপতি দত্ত প্রমুখ শিল্পীকে নিয়ে এই শিবির ফ্লোটেলের কম্পাস লাউঞ্জে শুরু হয় ২৫ জুন, শেষ আজ। এই তিন দিনে ছবিকে ঘিরে বসল বিশিষ্টজনেদের আড্ডাও। আয়োজক সংস্থার কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরী জানালেন, সারা বছর জুড়েই এমন নানা শিল্প-আয়োজন করবেন তাঁরা।
|
বেণু সেন স্মরণে |
শুধু আলোকচিত্র-শিল্পী নন, তিনি ছিলেন এক জন আলোকচিত্র-প্রযুক্তিবিদও। শুধু আলোর তুলি দিয়ে ছবি আঁকা নয়, তার প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি ব্যাপারেও নিজস্ব অবদান ছিল তাঁর। তিনি সম্প্রতি প্রয়াত বেণু সেন। নিরক্ষীয় আবহাওয়ার উপযোগী ফাইন গ্রেন ডেভেলপার (বি এস ৪) উদ্ভাবনের কৃতিত্ব তাঁরই। এ দেশে সাদা-কালো নেগেটিভ থেকে কালার সেপারেশন কিংবা ‘কালার ফোটোগ্রাম’-এর প্রবর্তক তিনি। তাঁর স্মরণে বই-চিত্র সভাঘরে এক আলোচনা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে আজ বিকেল সাড়ে ৫টায়। তাঁর ছবি ও জীবনকৃতি নিয়ে স্লাইড-প্রদর্শনী সহ বলবেন শ্যামল গুহ, বিশ্বতোষ সেন, সন্দীপ সাহা, সলিল বিশ্বাস। থাকবেন আমেদ আলি।
|
সুরের তারকা |
বাংলা ছবির সুরের আকাশ সেই তারায় তারায় দীপ্ত। রাইচাঁদ বড়াল, হিমাংশু দত্ত, কমল দাশগুপ্ত, পঙ্কজ মল্লিক, রবীন চট্টোপাধ্যায়... তারকাদের তালিকা বেড়েই চলবে। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে তথ্য? দীর্ঘ অবহেলার পরে তাঁদের জীবনের নানা তথ্য খুঁজছেন গবেষকরা। কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে। এ বার সুরের সেই তারকাদের আলোকচিত্র ও পরিচয়লিপি নিয়ে প্রদর্শনী। ১৯৩১-’৭০, এই পর্বে বাংলা চলচ্চিত্রের সুরকারদের পুনরুদ্ধার করা আলোকচিত্র ও পরিচয়লিপি নিয়ে প্রদর্শনী সাজিয়েছেন অরিন্দম সাহা সরদার। উত্তরপাড়ার বেঙ্গল স্টুডিয়োতে আজ শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী, চলবে ৩ জুলাই পর্যন্ত।
|
পথের শেষ কোথায় |
|
রামকৃষ্ণ চমৎকার সিনথেসাইজার বাজায়, খুব ভাল গান গায় ত্রিপর্ণা, দু’জনেই পারফর্ম করেছে আমার ছবিতে, কে বলে এরা প্রতিবন্ধী? যেন নিজেকে কিংবা আমাদের সকলকেই প্রশ্ন করছিলেন তনিমা সেন। অভিনয়ের খ্যাতি সরিয়ে রেখে এই প্রথম তাঁর ছবি পরিচালনা: পথের শেষ কোথায়। ‘মস্ত কোনও পরিচালক হওয়ার ইচ্ছে থেকে নয়, ওই প্রতিবন্ধী বাচ্চাগুলোর টানেই...।’ যখনই ওদের কোনও অনুষ্ঠানে বা পরিবারে গিয়েছেন, তাঁর গলা জড়িয়ে অসম্ভব আদর করেছে ওরা, ওদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর বাবা-মা-র বিষণ্ণ মুখ-ই তাড়িয়ে ফেরে তনিমা-কে। কাহিনি চিত্রনাট্য সবই তাঁর, প্রযোজক পাননি, আই আর এল-এর প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ছবি করা। আপাতত শুটিং শেষ, সেপ্টেম্বরে মুক্তির পরিকল্পনা। সৌমিত্র-সুপ্রিয়ার পাশাপাশি মূল প্রতিবন্ধী চরিত্রটিতে উত্তম-পৌত্র গৌরব, আর তাঁর বাবা ও মায়ের ভূমিকায় কৃষ্ণকিশোর এবং তনিমা স্বয়ং। সঙ্গের ছবিতে গৌরব ও তনিমা।
|
অন্য রাহুল |
সতেরো বছর আগে, ১৯৯৪-এ মৃত্যু হয়েছিল রাহুল দেববর্মনের। কিন্তু আজও তিনি অবিস্মরণীয়। সৌজন্য এফএম, এ কলকাতার অলিগলিতে বছরভর বেজেই চলেন পঞ্চম। আজও বাজবেন আরও বেশি করে, আজ যে তাঁর জন্মদিন। কিন্তু তাঁর যে গানগুলি বাজবে সে বড় চেনা, চিরচেনা গান। চিরচেনারা চিরজীবী হয়ে থাক, ‘রেকর্ড কালেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল’ আজই সন্ধে ছ’টায় তপন থিয়েটারে আয়োজন করেছে এক অন্য রকম অনুষ্ঠানের। পঞ্চমের দুষ্প্রাপ্য ও অল্পশ্রুত গানগুলি সেখানে শোনানো হবে পুরনো রেকর্ড থেকে। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা তার পরে রাহুল ও তাঁর গান নিয়ে জমিয়ে দেবেন এক আড্ডা। মূল আড্ডাধারী বিশিষ্ট রেকর্ড সংগ্রাহক সঞ্জয় সেনগুপ্ত। থাকবেন সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত, অশোক ভট্টাচার্যরাও।
|
বই খুঁজতে |
প্রতি বছর এ দেশে নানা ভাষায় কত বই প্রকাশিত হয় তা খুঁজে দেখা সত্যিই কষ্টকর। হাতের কাছে যদি প্রকাশনার একটি ক্রমতালিকা থাকত এ ভাবনায় বিদেশে কাজ শুরু হয়েছে বহু আগেই। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোগে এ দেশে এ বিষয়ে প্রথম ভাবনাচিন্তা শুরু হয় ২০০৯-এ, জাতীয় গ্রন্থাগারে এক আলোচনাসভার শেষে গঠিত হয় একটি কমিটি। এ দেশে নানা ভাষায় প্রকাশিত বইয়ের তালিকাকরণের পরিকল্পনা হয়। সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে সারা ভারত প্রকাশক সভাকেও। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারিতে কেরলে বসেছিল সভা, পরেরটি সম্প্রতি হল পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে। প্রকাশকদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার প্রকল্পটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। পশ্চিমবঙ্গে এটি রূপায়ণের দায়িত্ব পেয়েছে রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর কিশোরকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, প্রকল্পটি সার্থক করে তুলতে পরের আলোচনাসভা বসছে আগরতলায় এবং তার পর যথাক্রমে ইলাহাবাদ, লখনউ, জয়পুর বা জব্বলপুরের মতো শহরে।
|
পনেরোয় ‘মুখোমুখি’ |
‘মুখোমুখি’র পনেরো বছর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় এই পনেরো বছরে বহু উজ্জ্বল প্রযোজনা উপহার দিয়েছে এই গ্রুপ থিয়েটারটি। কিন্তু পনেরো বছরের উদযাপনে তারা শুধু নিজেদের থিয়েটারেই আটকে নেই। অ্যাকাডেমিতে ২-৫ জুলাই যে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে ‘মুখোমুখি’ তাতে অভিনীত হবে নান্দীপটের ‘শৃন্বন্তু কমরেডস’, সংসৃতি-র ‘বিকেলে ভোরের সর্ষেফুল’, স্বপ্নসূচনা-র ‘কন্যাদান’ এবং যোজক-এর নতুন নাটক ‘নষ্টনীড়’। থাকছে উৎসবের আয়োজক দলের ‘আত্মকথা’ ও ‘চেনা দুঃখ চেনা সুখ’ও। রতন থিয়ামকে সংবর্ধনা জানাবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
|
ডয়লি-র ছবি |
|
ঢাকায় ব্রিটিশ সরকারের কর্মচারী ছিলেন চার্লস ডয়লি (১৭৮১-১৮৪৫)। অবিভক্ত ভারতে জন্ম তাঁর, চার বছর বয়সে ইংল্যান্ডে যান প্রাথমিক শিক্ষার জন্য। ১৭৯৮-এ ফিরে আসেন কলকাতায়, কোর্ট অব অ্যাপিলের সহকারী নিবন্ধক হয়ে। তার পরে ভারতের নানা প্রদেশে নানা বিচিত্র জীবিকায় জড়িয়ে ছিলেন ডয়লি। সেই অভিজ্ঞতাকেই সূত্র করে জীবনভর এঁকেছেন ভারতের জীবনযাত্রা আর প্রকৃতির ছবি। চিত্রকলার সেই আদি মুদ্রণের যুগে ডয়লির উদ্যোগে পটনায় প্রতিষ্ঠিত হয় বিহার লিথোগ্রাফিক প্রেস। সেখান থেকেই প্রকাশিত হয় ডয়লির দ্য কস্টিউমস অ্যান্ড কাস্টমস অব মডার্ন ইন্ডিয়া। ১৮১৩-য় লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয় দি ইউরোপিয়ান ইন ইন্ডিয়া। ডয়লির এই ভারতবর্ষ এখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক প্রদর্শনীতে। ওদের সংগ্রহে মোট ১০৩টি ছবি আছে ডয়লির। তারই ২৮টি রঙিন ও সাদা-কালো লিথোগ্রাফ নিয়ে শনিবার ‘ভিউজ অব ক্যালকাটা অ্যান্ড ইটস এনভায়রনস’ প্রদর্শনীর সূচনা করলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার, চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। প্রদর্শনীর কিউরেটর নানক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর লেখা-সহ প্রকাশিত হয়েছে একটি সুদৃশ্য ক্যাটালগও।
|
ষাটে পা |
১৯৭০-এর দশক। উত্তমকুমার ও তাঁর পরিবারের আয়োজনে ভবানীপুরে তখন নানা জলসা। সেখানে ‘ফিল্মি’ গান গেয়ে বেড়ায় এক কিশোর। খবরটা শুনে তার মা বাবাকে অভিযোগ করলেন। বাবা কিন্তু খুশিই হলেন, ছেলেকে নিয়ে গেলেন মুম্বই। আয়োজন করলেন একটা শো, ‘ড্যাডি কিশোর অ্যান্ড সানি অমিত টুগেদার’। সাধারণ এই গল্পটাই অসাধারণ হয়ে ওঠে পাত্রপাত্রীর নামগুলি যোগ করলে। বাবার নাম কিশোরকুমার, মায়ের নাম রুমা গুহঠাকুরতা, আর ছেলের নামটা? অমিতকুমার। ‘ম্যায় এক পঞ্ছি মাতওয়ালা রে’ দিয়ে শুরু হয়েছিল হিন্দি গানের কেরিয়ার, তার পরে বাংলা-হিন্দি নানা গানের সুরে সুরে অমিত পা দিলেন ষাট বছরে। জন্ম ৩ জুলাই ১৯৫২। এ শহরের ছেলে, এখন বসবাস মুম্বইয়ে। মাঝে মাঝেই চলে আসেন নিজের শহরে। এসেছিলেন সম্প্রতি। তাঁর ষাটে পা উপলক্ষে অমিতকুমার ফ্যান ক্লাবের উদ্যোগে প্রকাশিত হল দুটি সিডি। সারেগামা থেকে প্রকাশিত বাংলা গানের অ্যালবামটিতে আছে অমিতের গলায় ‘আহা কী আনন্দ আকাশেবাতাসে’। সত্যজিতের সামনে এক অনুষ্ঠানে গানটা গেয়েছিলেন অমিত। এখনও পর্যন্ত সিডিতে অপ্রকাশিত এ রকম বেশ কয়েকটি গান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে প্রথম সিডিটি। দ্বিতীয় সিডিটিতে জনপ্রিয় হিন্দি ছবির গান, প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সাল। |
|
|
|
শতবর্ষে |
মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্র, ছোট থেকেই তাঁর স্বপ্ন লেখক হওয়ার। একদিন হাজির হলেন শান্তিনিকেতন, নিজের পেনটি রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে অটোগ্রাফ খাতায় সই করালেন। কবি বলেছিলেন, আমার ছোঁয়া পেন দিয়ে লিখলেই কিন্তু সহজে লেখক হওয়া যাবে না। সে দিনের সেই ছাত্রই পরবর্তী কালের জনপ্রিয় লেখক নীহাররঞ্জন গুপ্ত। ৬ জুন তিনি শতবর্ষ পূর্ণ করলেন। যশোরের ইতিনা গ্রামে সম্ভ্রান্ত কবিরাজ পরিবারে ১৯১১-য় তাঁর জন্ম। বাবা সত্যরঞ্জন, মা লবঙ্গলতা। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই প্রথম বই রাজকুমার প্রকাশিত হয়।
|
কলকাতায় ডাক্তারি পড়বার সময়ে তেঁতুলবিছের কামড়ে দিদির অকালমৃত্যুতে প্রতিজ্ঞা করেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে উচ্চতর জ্ঞানলাভ করে অসুস্থদের জন্য প্রাণপাত করবেন। সেনাবাহিনীর চিকিৎসক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। ইংল্যান্ড থেকে চর্মবিশেষজ্ঞ হিসেবে দেশে ফিরে মেডিক্যাল কলেজে যোগ দেন। ইংল্যান্ডে থাকাকালীনই সাক্ষাৎ করেছিলেন আগাথা ক্রিস্টির সঙ্গে। এ বার লেখা শুরু করলেন ‘কালো ভ্রমর’ গোয়েন্দাকাহিনি। সম্পাদনা করেন কিশোর-পত্রিকা ‘সবুজ সাহিত্য’। অগ্রজ সাহিত্যিক তারাশঙ্করকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। ভাল বাঁশি বাজাতেন, জানা গেল কন্যা করবী সেনের কথায়। গোলপার্কে লেখকের বাড়িতে আজও রক্ষিত অসংখ্য বই ও পত্রপত্রিকা। গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ সব মিলিয়ে দুশোর বেশি বই লিখেছেন। তাঁর গোয়েন্দা ‘কিরীটি রায়’ আজও জনপ্রিয়। উল্কা, বাদশা, লালুভুলু, উত্তরফাল্গুনী, অস্তি ভাগীরথী তীরে প্রভৃতি তাঁর উল্লেখ্য বই। ২২ জুলাই বাংলা আকাদেমিতে তাঁর শতবার্ষিকী উৎসবে প্রকাশ পাবে সবিতেন্দ্রনাথ রায় ও মনীশ চক্রবর্তী সম্পাদিত নীহাররঞ্জন গুপ্ত শতবার্ষিকী সংকলন। সঙ্গের ছবি মিত্র ও ঘোষের সৌজন্যে। |
|
|
|
|
|
|
|