জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবাকে দেখেনি সে। পায়নি পিতৃস্নেহ। সেই বাবার জন্যই রক্ত দিল ৯ বছরের অমর শেখ। বাবাকে বাঁচাতে নয়, তাঁর দেহাবশেষ চিহ্নিত করতে।
|
তারই মধ্যে এক জন সুকুর আলি। দাসেরবাঁধে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ের মধ্যে সুকুরের দেহাবশেষ রয়েছে, এই আশাতেই পরিজনেরা ডিএনএ পরীক্ষায় সম্মত হয়েছেন। আর সে জন্যই মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে রক্ত দিয়ে গেল অমর। সুকুরের দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে খুকুমণি, ছোট জ্যোৎস্না। আর অমর একমাত্র ছেলে। দিদিরা বাবার আদর পেলেও অমরের বাবাকে মনেই পড়ে না। বাবা যে কোনও দিন ফিরবে না, মা রাফিয়া বিবি’র কাছে সে কথা জেনে গিয়েছে অমর। তবু যাতে বাবার দেহাবশেষ চিহ্নিত হয়, সে জন্যই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছে এই কিশোর। এ দিন তার সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিল কাকু-কাকিমা। অমর বলে, “শুনেছি বাবা আর আসবে না। তাঁর জন্যই রক্ত দিতে এসেছি।” তার রক্তের নমুনা নিয়ে কী হবে, জানে না চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটি। শুধু জানে, বাবার জন্য সে রক্ত দিচ্ছে। হাসপাতালের অমরের পাশেই বসেছিলেন তার কাকিমা, ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর থেকেই নিখোঁজ দিলওয়ার শেখের মা রাবিয়া বিবি। এ দিন তিনিও রক্ত দিয়েছেন। ছেলের হাড়গোড় শনাক্ত করতে। রাবিয়ার কথায়, “ও তো তখন কোলেই ছিল। বাবাকে চেনার মতো বয়সও হয়নি।” |