মাত্র পাঁচশো মিটার লম্বা উলুবেড়িয়া স্টেশন রোড। কিন্তু বেআইনি দখলদারের দখলে চলে যাওয়ায় রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। স্টেশন রোডে হাঁটাচলা কিংবা গাড়ি নিয়ে যেতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় মানুষকে। এই চত্বরেই উলুবেড়িয়া হাসপাতাল, ১ নম্বর বিডিও অফিস, প্রচুর নার্সিংহোম থাকায় বহু মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন এই রাস্তা দিয়ে। তা ছাড়া, স্টেশনে স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীরা বহু বার অভিযোগ জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি।
এ ছাড়াও, স্টেশন রোডের দু’দিক দিয়ে গিয়েছে উলুবেড়িয়া শহরের মূল নিকাশি নালা। অভিযোগ, সেই নালাও দখল হয়ে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। সেই দখল করা অবৈধ নির্মাণগুলি বহু লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দখলদারদের কবলে পড়ে উলুবেড়িয়া হাসপাতালের প্রবেশপথ খুবই সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। আবার দখল হয়ে যাওয়া আবর্জনায় ভরা নিকাশি নালা থেকে নোংরা জল উপচে পড়ছে রাস্তায়। অবস্থা এমনই, উলুবেড়িয়া হাসপাতালের প্রধান নিকাশি নালাটি স্টেশন রোডের এই নালার সঙ্গে যুক্ত থাকায় হাসপাতালের নিকাশি ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে।
এ বিষয়ে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার গৌরাঙ্গসুন্দর জানা জানান, তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে পুরসভা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন, স্টেশন রোডের ধারের নালাটিকে চওড়া করা হোক। সেই সঙ্গে সেটি দখলমুক্ত এবং আবর্জনামুক্ত করার দরকারের কথাও জানানো হয়েছে। সুপারের আক্ষেপ, পুরসভা এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপই করেনি। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার উপরে ভরসা না রেখে সুপার পূর্ত দফতরকে অনুরোধ জানিয়েছেন, হাসপাতালের বর্জ্য আলাদা একটি নালার মাধ্যমে নিকাশির ব্যবস্থা করতে। নতুন নালাটি হবে হাসপাতালের নিজস্ব। |
স্টেশন রোড ব্যবসায়ী ইউনিয়নের সম্পাদক রেজ্জাক মোল্লাও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, “স্টেশন রোডের উপরে শুধুমাত্র নিকাশি নালাই নয়, ফুটপাথ দখল করে হকারেরা বসার ফলে এবং বেআইনি পার্কিং-এর জন্য রাস্তায় যানজট হচ্ছে। ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটছে। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক, পুরপ্রধানকে জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি।
উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান দেবদাস ঘোষ বলেন, “দখলদারেরা দীর্ঘ দিন ধরে আছেন। হঠাৎ করে তাঁদের সরানো সম্ভব নয়। তৃণমূল এই পুরসভায় বছর দু’য়েক মাত্র হল ক্ষমতায় এসেছে। ওঁদের নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। আর নিকাশি নালাগুলিকে শহরের প্রধান রাস্তা কটক রোডের নীচ দিয়ে নিয়ে গিয়ে মেদিনীপুর ক্যানালে ফেলার কাজ শীঘ্রই শুরু করব।”
এ বিষয়ে উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন বলেন, “আমি তো দেখছি গোটা উলুবেড়িয়া শহরটাই দেআইনি দখলদারে ভরে গিয়েছে। স্টেশন রোডের বিষয়ে ১৪ জুন পুরসভায় বৈঠকের পরে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হবে।” |