|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
প্রতিবন্ধীরা কেমন আছেন এই পশ্চিমবঙ্গে |
গড়িমসি-তে রাজ্যে শিকেয় প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকরি’ শিরোনামে দেবারতি সিংহ চৌধুরীর প্রতিবেদন (২৯-৪) প্রসঙ্গে কিছু কথা।
প্রতিবন্ধীদের অর্থনৈতিক কর্মসংস্থান হল তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পথে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারি নীতিতে অর্থনৈতিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অনেক কিছু ঘোষিত হলেও উপকৃত প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। সে কারণে এই হতভাগ্যদের দিনের পর দিন অসহনীয়, দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে। কর্ম বিনিয়োগ কেন্দ্রে নাম নথিভুক্তকরণ আর শূন্যপদে ৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ প্রতিবন্ধীদের জীবনে এক পরিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, নতুন পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ কার্যত বন্ধ। বেকার সমস্যা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
বিভিন্ন পরিকাঠামো অপ্রতুল থাকায় সরকারি, বেসরকারি সর্বত্র কর্মসংস্থান সঙ্কুচিত হচ্ছে। ফলে, হাজার হাজার প্রতিবন্ধী বছরের পর বছর এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম নথিভুক্ত করলেও আদৌ ডাক পাচ্ছেন না। তাই এ রাজ্যে, এ পর্যন্ত কত জন প্রতিবন্ধী চাকরি পেয়েছেন তা হাতে গুনে বলা যাবে। তা ছাড়া, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে চাকরির কোনও সংরক্ষণ নেই। এ সব কারণে শূন্যপদে আসন সংরক্ষণ না-করে সরকারি, বেসরকারি সমস্ত বিভাগীয় দফতরে মোট কর্মীদের মাত্র ১ শতাংশ যদি প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষণ করা হত তা হলে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানে এক উৎকৃষ্ট সহায়তামূলক পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারত। যার ফলে বহুসংখ্যক প্রতিবন্ধী স্বনির্ভরতার সন্ধান পেয়ে তাঁদের সহস্র মাইল পথ চলার পদক্ষেপ এখন থেকেই শুরু করতে পারতেন। |
|
প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান এ রাজ্যের সদ্য ক্ষমতাহারা বামফ্রন্ট সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কতখানি সদর্থক ছিল তা একটা উদাহরণেই পরিষ্কার হবে। দ্বিতীয় বার বাম সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকারের প্রতিটি দফতরে ফি-বছর প্রতিবন্ধী কর্মী চাকরিতে নিয়োগ করা হবে। এই মর্মে ১৯৮৩ সালের ২৭ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিন্ধান্তও হয়েছিল। তার পর দীর্ঘ আঠাশটা বছর অতিক্রান্ত। প্রতিবন্ধীদের সেই মানবাধিকার আজও মহাকরণে বন্দি। বাস্তবে আর ওই সিদ্ধান্ত রূপ পেল না।
চাকরির বাজার যখন সঙ্কুচিত, তখন গ্রাম-শহরে প্রতিবন্ধী যুবক-যুবতীদের উৎপাদনমুখী কাজের সুযোগ তৈরি করে দিতে সবচেয়ে বড় সহায় বিভিন্ন স্বনিযুক্তি প্রকল্পগুলি। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল স্তরে অনেক কিছু করার আছে। এঁদের জন্য ঝুঁকিবিহীন অথচ লাভজনক ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রকল্পের দ্বারা বিকল্প কর্মনিযুক্তির মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলা যেতে পারে। দুঃখের বিষয় আমাদের রাজ্যে এই প্রতিবন্ধীদের অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বনির্ভর করতে আজও তেমন কোনও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। তদানীন্তন রাজ্য সরকারের দলবাজি আর উদাসীনতায় কেন্দ্রীয় স্তরের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি আজও প্রতিবন্ধী কর্মসংস্থানের সহায়ক হয়ে ওঠেনি। পঞ্চায়েত এবং ব্লক স্তরে প্রয়োজনীয় সম্পদ এবং সম্ভাবনার প্রতি লক্ষ্য রেখে বিদ্যমান প্রকল্পগুলির হাজার হাজার কোটি টাকার এক দশমাংশও যদি প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানে লাগানো যেত, তা হলে গত তিন দশকে এ রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধীর দারিদ্র দূরীকরণের মাধ্যমে স্বনির্ভরতার হাসি ফোটানো যেত।
দুর্বলতর ও অবহেলিতদের উন্নয়নের গতিকে এ ভাবে বছরের পর বছর আর অবরুদ্ধ করে রাখা যেত না। আজ যখন কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে জাতীয় অর্থ কমিশনের দেওয়া বরাদ্দ অর্থের ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ খরচ করে, তখন শুনতে লজ্জা লাগে পশ্চিমবঙ্গে ওই হার মাত্র ৩০ শতাংশ। আমাদের রাজ্যে প্রতিবন্ধী স্বনির্ভরতার এই অধঃপতিত মসীলিপ্ত চিত্রটি জাতীয় ক্ষেত্রে রীতিমতো শিহরন উদ্রেক করেছে। |
চৈতন্যময় নন্দ। মুগবেড়িয়া, পূর্ব মেদিনীপুর
|
বাক্পটু |
বঙ্গ রাজনীতিতে শ্লেষ, বক্রোক্তি, ফুট কাটা বা তরজার ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। অকৃতদার বিধানচন্দ্র রায় ও নলিনী গুপ্তের উদ্দেশে কমিউনিস্টরা ছড়া কাটতেন এই বলে ‘এসে গেছে এই দেশে নলিনী, বিধান / বঙ্গ ললনারা সব হও সাবধান।’ শকুনরূপী ইন্দিরা গাঁধী এক সময় প্রচুর দেওয়ালে আসন করে নিয়েছিলেন।
এলাকার মহিলাদের পশ্চাদ্দেশ দেখিয়ে বিরোধী নেত্রীকে সম্ভাষণ জানানোর আহ্বান জানালেন ডাকসাইটে নেতা বিনয় কোঙার এই সে দিন। কিংবা ‘লালা, এ বার তুই পালা’ বা নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকদের ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন বিমান বসু। তা হলে খামকা অনিল বসুকে গাল পাড়া কেন? অি নল বসুর দোষ ভুল টাইমিং-এর জন্য। নচেৎ এই বয়সে ধমকানি খাওয়া বা দুঃখপ্রকাশের কোনও প্রয়োজনই হত না। বৈদ্যুতিন মাধ্যম না-থাকলে সহজেই মুদ্রণ মাধ্যমের ঘাড়ে তথ্য বিকৃতির দায় চাপিয়ে রেহাই পাওয়া যেত। হায়, বৈদ্যুতিন মাধ্যম! তোমার অভাবে আমজনতা কত হিরে-জহরত থেকে বঞ্চিত হয়েছে, কে জানে! |
সরিৎশেখর দাস। ব্যারাকপুর, কলকাতা-১২২ |
|
|
|
|
|