তাড়া করে বেধড়ক মার, জখম যুবক
ঠিক যেন হিন্দি সিনেমার দৃশ্য।
পাড়ার অলিগলি দিয়ে দৌড়চ্ছেন দুই যুবক। পিছনে রিভলভার উঁচিয়ে তাড়া করছে চার দুষ্কৃতী। এক যুবক কোনও রকমে পালাতে পারলেও অন্য জনকে ধরে ফেলল তারা। রিভলভারের বাঁট দিয়ে মেরে তাঁর মাথার পিছনটা ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তেই চলে গেল দুষ্কৃতীরা।
বুধবার রাতে দমদমের মধুগড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, জখম যুবকের নাম অনুপ দাস (২৮)। তাঁর মাথায় ১৭টি সেলাই পড়েছে। তবে ঘটনার এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালেও ওই দুষ্কৃতীদের দু’জন ফের মধুগড় বাজারে আসে। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধরে ফেলে। এক দুষ্কৃতী পালিয়ে গেলেও অন্য জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা। ধৃতের কাছ থেকে একটি রিভলভার ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাস দেড়েক আগেই ভরসন্ধ্যায় দমদম থানার শ্যামনগর খালপাড়ে এক যুবককে গুলি করেছিল দুষ্কৃতীরা। ফের দমদমের রাস্তায় এ ভাবে বন্দুক উঁচিয়ে দুষ্কৃতীদের দাপট এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
জখম অনুপ।—নিজস্ব চিত্র
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় শুরু হয়েছে পুলিশি টহল। মধুগড় এলাকায় এক সময় কুখ্যাত আসামি দীপক বিশ্বাসের ডেরা ছিল। ওই দাগি দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে খুন থেকে শুরু করে নানা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। দীপক এখন জামিনে মুক্ত। অভিযোগ, তার নেতৃত্বে সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চলেও পরিণত হয়েছিল মধুগড়। গত পুরভোটের পর থেকে দীপক এলাকা ছাড়া হয়। তারপর থেকে এলাকা আপাত শান্ত ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে যে দুষ্কৃতীরা মধুগড়ে হানা দেয়, তাদের মধ্যে দীপক বিশ্বাস ছিল। বুধবার রাতের ঘটনায় ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মধুগড় কি আবার পুরনো চেহারায় ফিরল, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান সি সুধাকর বলেন, “বুধবার রাতে দীপক বিশ্বাসই ছিল কি না, ধৃত যুবককে সে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিছু সূত্র মিলেছে।”
শুক্রবার মধুগড়ে গিয়ে দেখা যায় গোটা এলাকা থমথমে। জিপে টহল দিচ্ছে পুলিশ। অনুপ এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। এ দিন সকালেই তাঁকে আর জি কর হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। মুখে-মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় অনুপ জানান, বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি পাড়ার ক্লাবে ক্যারম খেলে ফিরছিলেন। তখনই কয়েক জন দুষ্কৃতী ওই ক্লাবের দিকে মোটরবাইক নিয়ে আসে। তাদের হাতে ছিল রিভলভার। অনুপ বলেন, “আমরা মরিয়া হয়ে ছুটতে থাকি। গলি দিয়ে বেশ কিছুটা দৌড়ই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওরা আমাকে ধরে ফেলে। আমাকে বালিতে ফেলে রিভলভারের বাঁট দিয়ে মারতে থাকে। আমার চিৎকারে আশপাশের লোক চলে আসায় ওরা পালায়।” দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তাঁরাই রক্তাক্ত অবস্থায় অনুপকে উদ্ধার করেন।
বুধবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, কেন দুষ্কৃতীরা অনুপকেই আক্রমণ করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই যুবক কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকেও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তদন্তকারী অফিসারেরা।
গত কয়েক মাসে দমদম এলাকার দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজেশ নায়েক ও গেদু পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা তাই ভেবেছিলেন এ বার হয়তো এলাকায় শান্তি ফিরবে। কিন্তু বুধবারের ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলে দিল তা নিয়ে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.